দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসন শেষে আগামীকাল ২৪ ডিসেম্বর দেশের মাটিতে পা রাখছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এই মাহেন্দ্রক্ষণকে ঘিরে সারা দেশে নেতাকর্মীদের মধ্যে যে আনন্দ-উল্লাস বিরাজ করছে, তার এক অনন্য প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছেন রিকশাচালক আনোয়ার হোসেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আসা এই সাধারণ মানুষটি দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে এখন 'আনোয়ার পাগলা' বা 'বিএনপির পাগলা আনোয়ার' নামে পরিচিত। রাজধানীর পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় যেখানে তারেক রহমানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে, সেখানে এক দিন আগেই হাজির হয়েছেন তিনি। তার চোখে-মুখে নেতার আগমনের আনন্দ এবং দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান হওয়ার তৃপ্তি স্পষ্ট।
আনোয়ারের কাছে রাজনীতি মানে কেবল দল নয়, রাজনীতি মানে নেতার প্রতি নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। তিনি জানান, গত ১৭ বছর ধরে তিনি তারেক রহমানের ফিরে আসার অপেক্ষায় প্রহর গুনেছেন। এই দীর্ঘ সময়ে তিনি অনেক জুলুম-নির্যাতন সহ্য করেছেন, কিন্তু দল ত্যাগের কথা কখনও ভাবেননি। নিজের প্রিয় নেতার ছবি ফ্রেমে বাঁধিয়ে গলায় ঝুলিয়ে রাখা আনোয়ার এখন সবার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। রিকশার ওপর দাঁড়িয়ে তিনি গান গেয়ে এবং স্লোগান দিয়ে উপস্থিত সমর্থকদের উজ্জীবিত করছেন। তার প্রতিটি কথা এবং গানে ফুটে উঠছে দীর্ঘ প্রবাস জীবনে থাকা তারেক রহমানের প্রতি এদেশের তৃণমূল মানুষের গভীর মমত্ববোধ।
আনোয়ারের জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো তার চুল। তিনি পণ করেছেন, যতক্ষণ না প্রিয় নেতা তারেক রহমানের সাথে সরাসরি দেখা হবে এবং নেতা নিজে নির্দেশ দেবেন, ততক্ষণ তিনি চুল কাটবেন না। এই আবেগ এবং নিষ্ঠা সাধারণ রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যে বিরল। এমনকি সংসারের অভাব-অনটনও তাকে দমাতে পারেনি। তিন দিন ধরে রিকশা চালানো বন্ধ রেখে তিনি সংবর্ধনাস্থলে অবস্থান করছেন। পরিবারের ভরণপোষণের চিন্তার চেয়ে নেতার দর্শন পাওয়াটাই তার কাছে মুখ্য। তার মতে, পরিবারের সদস্যরা আলু-ভর্তা দিয়ে ভাত খেয়ে হলেও খুশি থাকবে যদি তাদের প্রিয় নেতা নিরাপদে দেশে ফেরেন। এই ত্যাগ তৃণমূল বিএনপির শক্তিরই বহিঃপ্রকাশ।



















