close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

বিডিআর হত্যার ঘটনা পুনঃতদন্তে গঠিত স্বাধীন কমিশনের মেয়াদ বাড়ল..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বিডিআর হত্যাকাণ্ড তদন্তে গঠিত স্বাধীন কমিশনের মেয়াদ আরও তিন মাস বাড়িয়েছে সরকার। পিলখানার নৃশংস ঘটনার পূর্ণ সত্য উন্মোচনে কাজ করছে এই বিশেষ কমিশন।..

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সংঘটিত ভয়াবহ বিডিআর হত্যাকাণ্ড আবারও নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সরকার এই ভয়াল ঘটনার প্রকৃত চিত্র উন্মোচনে গঠিত স্বাধীন তদন্ত কমিশনের মেয়াদ আরও তিন মাস বাড়িয়েছে। নতুন মেয়াদ কার্যকর হচ্ছে ১ জুলাই ২০২৫ থেকে এবং তা চলবে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত।

এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে সোমবার (৩০ জুন) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। সরকারের মতে, এই হত্যাকাণ্ডের প্রকৃতি, জড়িত ব্যক্তিরা, এবং এর পেছনে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের ধারা পূর্ণরূপে অনুধাবন করতে আরও সময় প্রয়োজন।

২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে ঢাকার পিলখানাস্থ বিডিআর সদর দপ্তরে যা ঘটেছিল, তা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক মর্মান্তিক অধ্যায়। ওই ঘটনার সময় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন মানুষ নির্মমভাবে নিহত হন। এই হত্যাকাণ্ড শুধুমাত্র সেনাবাহিনীকেই নয়, পুরো জাতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল।

২০২৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করে। এর নেতৃত্বে আনা হয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আ ল ম ফজলুর রহমান-কে। প্রথম পর্যায়ে কমিশনকে তিন মাস সময় দিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ঘটনার প্রকৃতি ও সংশ্লিষ্ট সকল দিক বিশ্লেষণের।

তবে পরে সময়সীমা বাড়িয়ে আরও তিন মাস দেওয়া হয়। সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার পর, নতুন করে আবার তিন মাসের সময়সীমা বাড়িয়ে আজকের প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়।

তদন্ত কমিশনের দায়িত্ব অত্যন্ত জটিল ও ব্যাপক। তাদের কাজের মধ্যে রয়েছে:

  • ঘটনার প্রকৃতি ও স্বরূপ উদঘাটন

  • হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও সংস্থা চিহ্নিত করা

  • সহায়তাকারী, ষড়যন্ত্রকারী, ইন্ধনদাতা শনাক্ত করা

  • ঘটনার আলামত ধ্বংসে কারা দায়ী, তা নির্ধারণ করা

  • দেশি-বিদেশি অপরাধী সংযোগ বিশ্লেষণ

  • সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের ভূমিকা মূল্যায়ন

কমিশনকে একটি পূর্ণাঙ্গ তথ্যভিত্তিক রিপোর্ট তৈরি করে সরকারের কাছে জমা দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতের জন্যও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থায় করণীয় নির্ধারণ সম্ভব হয় । এই তদন্ত কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে জনগণের ভেতর রয়েছে গভীর আগ্রহ। দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও অনেকেই মনে করেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত দায়ীদের বিচার এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। অনেকে প্রশ্ন তোলেন, আদৌ কি এই কমিশন সত্য প্রকাশ করতে পারবে?

তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এবার কমিশন পূর্ণ স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করছে এবং তথ্য গোপন করার সুযোগ নেই। কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

পিলখানার মতো একটি জাতীয় ট্র্যাজেডির প্রকৃত তথ্য উদ্ঘাটনের জন্য এই কমিশন যে নতুন করে সময় পেয়েছে, তা নিঃসন্দেহে জাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে তদন্ত কার্যক্রম। এখন পুরো দেশ তাকিয়ে আছে – সত্য কতটা জোরালোভাবে বেরিয়ে আসে, এবং ইতিহাসের এই রক্তাক্ত অধ্যায়ের ন্যায়বিচার অবশেষে কীভাবে নিশ্চিত হয়।

لم يتم العثور على تعليقات