close
ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!
ছাত্র-জনতার ব্যাপক আন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে আশ্রয় নেন। পরিকল্পনা ছিল দিল্লি হয়ে বোন শেখ রেহানার সঙ্গে যুক্তরাজ্যে চলে যাবেন। তবে তিনি সেই সুযোগ পাননি।
৫ আগস্ট দিল্লির হিন্দন বিমান ঘাঁটিতে শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমান অবতরণ করে। এরপর তার নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয় ভারতীয় বাহিনী।
আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত অনুসন্ধানী সাংবাদিক সেলিম সামাদ ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘নর্থইস্ট নিউজ’-এ লেখা এক প্রতিবেদনে দাবি করেছেন, শেখ হাসিনা দিল্লির কাছাকাছি একটি বিমান ঘাঁটির নিরাপদ বাড়িতে আছেন, যেখানে তিনি কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না।
সেলিম সামাদ তার প্রতিবেদনে এক অজ্ঞাত সূত্রের বরাতে লিখেছেন, ৫ আগস্ট হিন্দন বিমান ঘাঁটিতে পৌঁছানোর পর শেখ হাসিনাকে গৃহবন্দি করা হয়েছিল কি না, তা সূত্রটি নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে সূত্রটি জানিয়েছে যে, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস শপথ নেওয়ার পর এবং মোদির সঙ্গে প্রথমবার টেলিফোনে কথা বলার কয়েক ঘণ্টা পর শেখ হাসিনার যোগাযোগের ডিভাইসগুলোতে বিঘ্ন ঘটে এবং তাকে একটি নিরাপদ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকে শেখ হাসিনা আর কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না।
সূত্রটি আরও জানিয়েছে, শেখ হাসিনাকে ওই বাড়ির বাইরে যাওয়ার অনুমতি নেই। এমনকি তিনি ঘাঁটির ভেতরে সেনাদের জন্য থাকা সুপার শপেও যেতে পারছেন না, যদিও বাড়ি থেকে সুপার শপটি হাঁটার দূরত্বে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দিল্লিতে অবস্থান করছেন, কিন্তু তিনি এখনো তার মায়ের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাননি, যদিও শেখ হাসিনা এক মাস ধরে দিল্লিতে রয়েছেন।
শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় জানিয়েছিলেন যে, তিনি দিল্লিতে গিয়ে মায়ের সঙ্গে দেখা করবেন। কিন্তু তাকে দিল্লিতে আসতে বারণ করা হয়, কারণ তিনি এসে দেখা করতে পারবেন না।
এছাড়া, হাসিনার ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে, ফলে তিনি পরিচিত কারও সঙ্গে কথা বলতে পারছেন না। শেখ হাসিনাকে যে নির্জন বাড়িতে রাখা হয়েছে সে বিষয়ে তার ছেলে-মেয়ের নীরবতাও স্পষ্ট।
এই প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, শেখ হাসিনার সঙ্গে দিল্লিতে আছেন তার বোন শেখ রেহানাও। যদিও রেহানা ব্রিটিশ নাগরিক, কিন্তু তিনিও সেখানে আটকে গেছেন।
এছাড়া, শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের আইনসভার সদস্য এবং জুনিয়র মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি যুক্তরাজ্যের সরকারকে তার খালা হাসিনা এবং মা রেহানাকে সাহায্য করার জন্য কোনো অনুরোধ করেছেন বলে জানা যায়নি। টিউলিপ নয়াদিল্লির ব্রিটিশ হাইকমিশন থেকে কোনো সহায়তা চেয়েছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়।
সেলিম সামাদের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার ইঙ্গিত দিয়েছেন। যদি বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে হাসিনাকে ফেরত চায়, তবে এটি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মোদির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যদি বাংলাদেশের অনুরোধের পরও ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত না দেয়, তবে এটি ভারতীয় ভাবমূর্তিতে বড় ধাক্কা দেবে এবং ভারত কীভাবে এই সংকট কাটিয়ে উঠবে তা বলা মুশকিল।
সূত্র: নর্থইস্ট নিউজ
Nema komentara