বিচারপতি মানিক মারা যাননি: কারা অধিদপ্তর

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লেও, কারা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে—এটি সম্পূর্ণ গুজব। তিনি জীবিত ও সুস্থ অবস্থায় কাশিমপুর কারাগার-২ এ রয়েছেন..

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গতকাল থেকে একটি গুজব ঘুরে বেড়াচ্ছে—যাতে দাবি করা হয়, কাশিমপুর কারাগার-২ এ বন্দি থাকা সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক মারা গেছেন। মুহূর্তেই এই খবর ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুক ও অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে। তবে এই তথ্য পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে নিশ্চিত করেছে কারা অধিদপ্তর। তারা বলছে, সাবেক এই বিচারপতি সুস্থ ও নিরাপদ আছেন, এবং কাশিমপুর কারাগার-২ তেই অবস্থান করছেন।

সোমবার (২৬ মে) সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মানিকের মৃত্যু নিয়ে নানা ধরনের পোস্ট ছড়িয়ে পড়তে থাকে। অনেকেই পোস্টের সত্যতা যাচাই না করে তা শেয়ার করতে থাকেন, যা জনমনে উদ্বেগ ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে।

এই প্রসঙ্গে সহকারী কারা মহাপরিদর্শক (উন্নয়ন) মো. জান্নাত-উল ফরহাদ সাংবাদিকদের জানান, "বিচারপতি মানিক মারা যাননি। তিনি কাশিমপুর কারাগার-২ এ সুস্থ আছেন। এই ধরনের গুজব বিভ্রান্তিকর এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে।"

সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক দেশের আলোচিত একজন সাবেক বিচারপতি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ফলে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, তিনি নজরদারির মধ্যে চলে আসেন। পরে ২৩ আগস্ট সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পালানোর চেষ্টাকালে তিনি বিজিবির হাতে আটক হন। পরদিন ২৪ আগস্ট ভোরে তাকে কানাইঘাট থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

সেই সময় থেকেই তিনি কারাগারে বন্দি রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তদন্তাধীন, যদিও বিস্তারিত কোনো অভিযোগ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।

এদিকে, তার মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় একাধিক মহল উদ্বিগ্ন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। অনেকের আশঙ্কা—এ ধরনের গুজব উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছড়ানো হচ্ছে, যাতে কারা কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করা যায় অথবা রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়া যায়।

কারা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গুজব ছড়ানোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী, সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়ানো দণ্ডনীয় অপরাধ। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও মাঠে নেমেছে।

সাবেক বিচারপতি মানিকের পরিবারের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, তারা কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন এবং তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন নয়। তারা গুজব ছড়ানো বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হলো, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো তথ্য শেয়ার করার আগে সত্যতা যাচাই করা কতটা জরুরি। গুজব শুধু জনমানসে বিভ্রান্তি তৈরি করে না, বরং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর আস্থার সংকটও তৈরি করে।

Nessun commento trovato