বাংলাদেশের রাজনীতিতে উত্তাপ বাড়াচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক মো. সারজিস আলম সোমবার নীলফামারী জেলার ডোমারে এক পথসভায় বলেন, “যতদিন না বাংলাদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেন কোনোভাবেই দায়িত্ব হস্তান্তর না করে।” তাঁর মতে, দেশের জনগণ এখন আর খুনিদের ক্ষমায় বিশ্বাস করে না, তারা বিচার চায়—চূড়ান্ত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার।
এনসিপির পক্ষ থেকে ওই দিন জেলার ছয়টি উপজেলায় গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণ ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এসব কর্মসূচির সমাপ্তি ঘটে ডোমারে আয়োজিত এক বড় পথসভার মাধ্যমে। সেখানে সারজিস আলম বলেন, “আমরা অতীতে দেখেছি কীভাবে ভোটের আগেই জনগণের পকেটে টাকা ঢেলে দিয়ে ক্ষমতা দখল করা হয়েছে। তারপর সেই নেতারাই আবার জনগণের ভাতার টাকা বন্ধ করে দিয়েছে, দারিদ্র্য দূরীকরণ কর্মসূচি বন্ধ করেছে, এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদকে ব্যক্তিগত আয়ের উৎস বানিয়েছে।”
তিনি বলেন, “আজকের এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হচ্ছে সত্যিকারের দেশপ্রেমিক ও জনগণের কথা বলার সাহস রাখে এমন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান। সেই জায়গা থেকেই এনসিপি উঠে এসেছে। এই দল সেই নেতৃত্বের উত্তরসূরি যারা দেশের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিল। সেই ঐতিহাসিক সত্যকে নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা আমাদের দায়িত্ব।”
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় আক্রমণ
আওয়ামী লীগের সমালোচনায় মুখর সারজিস আলম বলেন, “বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক মেরুকরণ অত্যন্ত স্পষ্ট। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তারা মনে করে আওয়ামী লীগ শুধুই লুটপাটের দল। শেখ হাসিনা আর কোনোভাবেই ক্ষমতায় ফিরে আসতে পারবেন না—যদি ফিরে আসেনও, তবে কেবলমাত্র বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর জন্য।”
এই মন্তব্যে পথসভায় উপস্থিত সাধারণ জনগণের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়। অনেকেই হাততালি দিয়ে তাঁর বক্তব্যকে সমর্থন জানান।
জাতীয় ঐক্যের আহ্বান
সারজিস আলম তাঁর বক্তব্যে সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি একটি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আসুন আমরা সবাই মিলে এই ষড়যন্ত্রকারীদের রুখে দিই। আগামী জুলাই মাসে আমরা জনগণের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করব, যাতে আর কেউ দেশের জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে।”
তিনি আরও বলেন, “ভবিষ্যতের বাংলাদেশ এমন একটি দেশ হবে, যেখানে সব রাজনৈতিক দল মতপার্থক্য ভুলে গিয়ে জনগণের স্বার্থে একমত হতে পারবে।”
ভোটারদের উদ্দেশ্যে বার্তা
নির্বাচন প্রসঙ্গে সারজিস বলেন, “জাতীয় নাগরিক পার্টি জনগণের সঙ্গে থাকার রাজনীতি করে। আপনাদের কাউকে ভালো লাগলে ভোট দেবেন, ভালো না লাগলে দেবেন না। অন্ধ সমর্থনের কোনো প্রয়োজন নেই। আমরা চাই স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও জনগণের আস্থার ওপর ভিত্তি করে রাজনীতি হোক।”
এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি অন্যদের মতো জোর করে ভোট আদায়ের রাজনীতি থেকে সরে এসে একটি নতুন ধারার রাজনীতির বার্তা দিয়েছেন।
 'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  
  
 
		 
				 
			



















 
					     
			 
						 
			 
			 
			 
			 
			 
			