close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা: ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীকে 'উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আইন' ঘোষণা করে বাতিল করেছে। এই রায়ের মাধ্যমে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাত থেকে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হা..

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা: ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীকে 'উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আইন' (Colourable Legislation) ঘোষণা করে বাতিল করেছে। এই রায়ের মাধ্যমে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাত থেকে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি ২০২৫ সালের ৫ জুন সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়।

রায়ের পটভূমি ও বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে এই রায় দেন। রায়ে বলা হয়, ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং এটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর পরিপন্থী। বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী বলেন, "এটি ছিল একটি স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রচেষ্টা, যেখানে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল থেকে কেড়ে নিয়ে সংসদের হাতে ন্যস্ত করার চেষ্টা করা হয়েছিল।

বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম বলেন, "সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে। এই অনুচ্ছেদের বিধানগুলোকে অগ্রাহ্য করে কোনো অতিরিক্ত বিচারিক ঘোষণা এর কর্তৃত্বকে দুর্বল করতে পারে।"

সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের পুনর্বহাল

রায়ের মাধ্যমে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ সম্পূর্ণরূপে পুনর্বহাল করা হয়েছে। এই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে থাকবে। বিচারপতি মো. রেজাউল হক বলেন, "সংবিধানের ৯৬(৮) অনুচ্ছেদের অধীনে সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারকের পদত্যাগ সংক্রান্ত বিধান পুনরুজ্জীবিত করা একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।"

রায়ের প্রভাব ও ভবিষ্যৎ নির্দেশনা

এই রায়ের মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং সংবিধানের মৌলিক কাঠামো সুরক্ষিত হয়েছে। বিচারপতি এসএম ইমদাদুল হক বলেন, "তৃতীয় বিচারকের পর্যবেক্ষণের সামগ্রিক পাঠে স্পষ্ট যে তিনি বেশ কিছু অশালীন, অশ্লীল এবং অশালীন শব্দ ব্যবহার করেছেন, যা সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করেছে।"

রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, "বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হলো আইনের শাসনের অপরিহার্য শর্ত, যা যেকোনো গণতান্ত্রিক সমাজের ভিত্তি গঠন করে।" এই রায়ের মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হয়েছে।


উপসংহার:

সুপ্রিম কোর্টের এই রায় বাংলাদেশের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও সংবিধানের মৌলিক কাঠামো সুরক্ষায় একটি মাইলফলক। এই রায়ের মাধ্যমে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে ফিরিয়ে দিয়ে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

No comments found


News Card Generator