close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

বিচার বিভাগে বিপ্লব! বিচারকদের অবসরের বয়স ৭০ করার নতুন প্রস্তাব, সংস্কারের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত!

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশের বিচার বিভাগে আসছে যুগান্তকারী পরিবর্তন। সম্প্রতি, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারকদের অবসরের বয়স ৭০ বছর করার প্রস্তাব দি
বাংলাদেশের বিচার বিভাগে আসছে যুগান্তকারী পরিবর্তন। সম্প্রতি, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারকদের অবসরের বয়স ৭০ বছর করার প্রস্তাব দিয়েছে। এটি একটি বিশাল পদক্ষেপ, যার লক্ষ্য বিচার বিভাগের কার্যকারিতা বৃদ্ধি এবং সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়ার উন্নয়ন। বর্তমানে, বাংলাদেশের সংবিধানে প্রধান বিচারপতি এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অবসরের বয়স ৬৭ বছর নির্ধারিত রয়েছে, তবে এই নতুন প্রস্তাবটির মাধ্যমে তা ৭০ বছরে উন্নীত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এই প্রস্তাবটি বাস্তবায়িত হলে, বিচারকদের কাজের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা বিচার বিভাগের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান হয়ে উঠবে। এর ফলে বিচারকরা তাদের পূর্ণ সক্ষমতা নিয়ে বিচার কাজ পরিচালনা করতে পারবেন এবং বিচার বিভাগে আরও স্থিতিশীলতা ও দক্ষতা আসবে। মামলা জট নিরসনে জরুরি ব্যবস্থা: কমিশন আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করেছে, যা বিচার বিভাগের কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার উদ্দেশ্যে। কমিশনটি অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজদের মধ্যে যারা সৎ, দক্ষ এবং সুস্বাস্থ্যের অধিকারী, তাদের দুই-তিন বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। এটি বিশেষ করে সেইসব জেলায় কার্যকর হতে পারে, যেখানে মামলা জট বেশি এবং দ্রুত নিষ্পত্তি প্রয়োজন। এছাড়া, কমিশন সুপারিশ করেছে যে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের সম্পত্তির বিবরণ প্রতি তিন বছর পরপর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে, যাতে তা জনসাধারণের কাছে সহজেই পৌঁছাতে পারে। এটি বিচার বিভাগের দুর্নীতি প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং বিচারকদের স্বচ্ছতা বজায় রাখবে। বিচার বিভাগে স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস এবং প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা: বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে এবং বিচার বিভাগের কার্যক্রমে গতিশীলতা আনতে স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস গঠনের প্রস্তাব করেছে। এর মাধ্যমে বিচার বিভাগে দক্ষ কর্মী নিয়োগ ও প্রশাসনিক কাঠামো আরও শক্তিশালী হবে। কমিশন আরও একটি প্রস্তাব করেছে, যার মাধ্যমে বিচার বিভাগকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করা হবে। এটি নিশ্চিত করবে যে, বিচার বিভাগের সকল কার্যক্রম নিরপেক্ষভাবে পরিচালিত হবে, যা জনগণের মধ্যে আস্থার সৃষ্টি করবে। গ্রাম আদালতের সংস্কার: গ্রাম পর্যায়ে ছোট ছোট বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য স্থানীয় বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতি প্রবর্তন জরুরি বলে কমিশন মনে করছে। এর মাধ্যমে গ্রামের মানুষদের দ্রুত এবং সহজে বিচার সেবা পাওয়ার সুযোগ হবে। বর্তমান গ্রাম আদালতগুলোর কার্যক্রমের আমূল সংস্কারের মাধ্যমে এই সেবা আরও উন্নত করা হবে। প্রধান বিচারপতি নিয়োগে স্বচ্ছ প্রক্রিয়া: প্রধান বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়েও কমিশন একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছে। বর্তমান প্রস্তাব অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি আপিল বিভাগের প্রবীণতম বিচারককেই প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেবেন, এবং এতে নির্বাহী বিভাগের কোনো প্রভাব থাকবে না। এতে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা আরও সুসংহত হবে। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল: সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করতেও কমিশন প্রস্তাব দিয়েছে। এই কাউন্সিলের মাধ্যমে বিচারকদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠলে তা নিরপেক্ষভাবে তদন্ত হবে। এছাড়া, কাউন্সিলটি বিচারকদের সম্পত্তির বিবরণী সংগ্রহ এবং পর্যালোচনা করবে, যা বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে। উপজেলা পর্যায়ে আদালত সম্প্রসারণ: বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন উপজেলা পর্যায়ে আদালত সম্প্রসারণের প্রস্তাবও দিয়েছে। বিশেষ করে যেসব উপজেলায় মামলার চাপ বেশি, সেখানে আদালত স্থাপন এবং চৌকি আদালতগুলোর কার্যক্রম সচল রাখার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। শেষ কথা: বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের এই সুপারিশগুলি বিচার বিভাগের দক্ষতা, স্বচ্ছতা এবং কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হতে পারে। সরকারের পক্ষ থেকে এসব সুপারিশ বাস্তবায়নের পর, বিচার বিভাগে এক নতুন যুগের সূচনা হবে, যেখানে জনগণ বিচার পাবে দ্রুত, স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষভাবে। এটি দেশের আইন বিচার ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী এবং বিশ্বাসযোগ্য করে তুলবে, যা সবার জন্য সুবিচার নিশ্চিত করবে।
Ingen kommentarer fundet


News Card Generator