ভূঞাপুরে ক্রেতা-বিক্রেতা শুন্য ঐতিহ্যবাহী গোবিন্দাসী পশুর হাট!..

Hady Chakder avatar   
Hady Chakder
তৎপর প্রশাসন ও হাট কর্তৃপক্ষ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী গোবিন্দাসী পশুর হাটে বিরাজ করছে অচলাবস্থা। সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে বসা এই হাটটিতে একসময় ভীড় জমাত শত শত ক্রেতা ও বিক্রেতা। যেখানে গরু-ছাগলের দাম দরের আওয়াজে মুখরিত থাকত হাট প্রাঙ্গণ,।

অথচ আজ সেখানে দেখা মিলছে না আগের মতো ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়। এখন সেই দৃশ্য অনেকটাই অতীত। হাটজুড়ে শূন্যতা, পশু কম, ক্রেতা-বিক্রেতা নেই বললেই চলে। 

রবিবার সরেজমিনে জানা যায়, গত কয়েক মাস ধরেই হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি ও সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক চাপের কারণে অনেকেই পশু কেনা থেকে বিরত থাকছেন। 

অন্যদিকে বিক্রেতারা অনেকেই বলছেন, গত কয়েক বছর হাটের সার্বিক নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সেবা সঠিক ভাবে না পাওয়ায় এবারে অনেকেই এই হাটে পশু নিয়ে আসতেও অনাগ্রহী হয়েছেন।

তবে প্রশাসন, প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর ও হাট কর্তৃপক্ষ সুত্রে জানা যায়, হাট ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে তারা তৎপর। নিয়মিত পশু চিকিৎসক মোতায়েন, জীবাণুনাশক ছিটানো, জাল টাকা সনাক্তের বুথ, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি শতভাগ নিশ্চিত করতে সব পদক্ষেপই নেওয়া হয়েছে। 

হাটে আসা বিক্রেতা মোতালেব মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমি গত হাটেও গরু নিয়ে এসেছিলাম, কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে ফিরে গেছি। আজও একই অবস্থা। খরচই উঠে না, লাভ তো দূরের কথা।”

অন্যদিকে একজন ক্রেতা ফরিদুল ইসলাম বলেন, পরে দাম বেশি হবে ভেবে আগেই হাটে এসেছি কোরবানির পশু ক্রয় করতে। হাটে গরু-ছাগলের সংখ্যা অনেক কম। দামও অনেক বেশি তাই ফিরে যাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ সামনের হাটে কিনে ফেলবো।

স্থানীয় বাসিন্দা ও সাংবাদিক খায়রুল খন্দকার বলেন, “গোবিন্দাসী হাট শুধু কেনাবেচার জায়গা নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতির অংশ। প্রশাসন, হাট কর্তৃপক্ষ ও জনগণের সম্মিলিত উদ্যোগেই আবারো হাটের প্রাণ ফিরে আসবে। 

হাট সংশ্লিষ্ট একজন উপজেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল প্রামাণিক বলেন, ক্রেতা-বিক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে হাটের প্রচারণা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। পলাতক সরকারের আমলে এলাকার প্রভাবশালীদের বাড়তি চাঁদা দিতে হত, তাই হাটটিতে পশু ক্রেতা-বিক্রেতারা আগ্রহ হারিয়েছিল। তবে এবার উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় শুধুমাত্র সরকারি ফি দিয়েই পশু ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। আশা করি সামনের হাট গুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতা আরো বাড়বে। 

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. স্বপন চন্দ্র দেবনাথ বলেন, “প্রতিটি হাটে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম মোতায়েন আছে। গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা, টিকা প্রদান এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে পশু কম থাকায় চিকিৎসা সেবা কম দিতে হচ্ছে।”

ভূঞাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম রেজাউল করিম বলেন, পশুর হাট গুলোতে যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা না ঘটে, সে জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। চুরি-ছিনতাই সহ বিভিন্ন অপরাধ দমনে আমাদের টহল টিম সাদা পোশাকেও কাজ করছে। আজকের হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা কম ছিল। তবে সামনের হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার চাপ অনেক বাড়বে। তারা যেন নিরাপদে লেনদেন করতে পারেন সেটি নিশ্চিত করতে কাজ করা হচ্ছে।”

Inga kommentarer hittades