টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের ডিগ্রিরচর গ্রামে চাঞ্চল্যকর এক ঘটনা ঘিরে স্থানীয় রাজনীতিতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় বিএনপির প্রভাবশালী নেতা ও ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তোতা মোল্লার বিরুদ্ধে তারই ভাগ্নে-বউয়ের শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, এই অভিযোগকে ধামাচাপা দিতে নানামুখী চাপ প্রয়োগ ও হুমকির অভিযোগ উঠেছে বিএনপির একটি অংশের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী তরুণী বিথি (১৮) অভিযোগ করেন, কিছুদিন আগে তার স্বামী কর্মসূত্রে বাইরে থাকার সময় তিনি নিজ বাড়িতে একা ছিলেন। এই সুযোগে তার চাচাতো মামা তোতা মোল্লা আচমকা বাড়িতে এসে অশ্লীল আচরণ করেন এবং তাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালান। ঘটনার সময় বাড়িতে আর কেউ না থাকায় তিনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
পরবর্তীতে তিনি বিষয়টি তার স্বামীকে জানান। তার স্বামী তাৎক্ষণিকভাবে মাকে বিষয়টি জানান এবং পরবর্তীতে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে তোতা মোল্লার স্ত্রীকে জানানো হয়। কিন্তু অভিযোগের সত্যতা অস্বীকার করে উল্টো ভুক্তভোগীর পরিবারকেই চাপে রাখার অভিযোগ উঠেছে তোতা মোল্লা পক্ষের বিরুদ্ধে।
ঘটনার পর ভূঞাপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হলেও একাধিক দিন কেটে গেলেও কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিএনপির একাংশ তোতা মোল্লাকে রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছেন এবং ঘটনাটিকে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, "ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে। আমরা চাই, ন্যায়বিচার হোক এবং অপরাধী যে-ই হোক, তাকে শাস্তির আওতায় আনা হোক। রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে অপরাধ ঢাকতে দেওয়া হবে না।"
এ বিষয়ে অভিযুক্ত তোতা মোল্লার প্রতিক্রিয়া জানতে তার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এদিকে, নারীর প্রতি সহিংসতার এমন ঘটনায় থানার নিষ্ক্রিয়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে এলাকাবাসী। তাদের দাবি, প্রভাবশালীদের চাপে পুলিশ তদন্তে অগ্রসর হচ্ছে না।
ভুক্তভোগীর পরিবার বলছে, তারা প্রাণনাশের হুমকিও পাচ্ছেন। “তোতা মোল্লা যে ধরনের কথাবার্তা বলেছে, তাতে মনে হচ্ছে সে আমাদের মুখ বন্ধ রাখতে চায়,” বলেন বিথির স্বামী।
ঘটনার তদন্ত এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে বড় ধরণের সামাজিক উত্তেজনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইতিমধ্যে ঘটনাটির উপর নজর রাখছে বলে জানা গেছে। তারা বলছে, এধরনের ঘটনায় রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে পার পেয়ে গেলে সমাজে নারী নির্যাতনের মাত্রা আরও ভয়ঙ্কর রূপ নেবে।
এই ঘটনায় স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে—রাজনৈতিক ক্ষমতা ও সামাজিক প্রভাব ব্যবহার করে একজন নারীকে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা চলছে। ভুক্তভোগীর সাহসী অবস্থান এবং জনগণের প্রতিবাদই হতে পারে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অস্ত্র।
 'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  
  
 
		 
				 
			



















 
					     
			 
						 
			 
			 
			 
			 
			 
			