close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ভিডিওর ভয় দেখিয়ে লাখ টাকার চাঁদা, ‘নানা ভাই’-এর কাণ্ডে কাঁপছে সিলেট।..

ছাইম ইবনে আব্বাস  avatar   
ছাইম ইবনে আব্বাস
সিলেট শহরের বিমানবন্দর সড়কের পাশে অবস্থিত ‘শাপলা হলিডে হোম’ নামক রিসোর্টকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল এক ভয়ংকর ব্ল্যাকমেইল চক্র।..

রিসোর্টটির দায়িত্বে থাকা ফয়জুল খান আলম, যিনি এলাকায় ‘নানা ভাই’ নামে পরিচিত, তরুণীদের ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের ব্ল্যাকমেইল করে বিপুল অঙ্কের অর্থ আদায় করতেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আলম ৫-৬ বছর আগে রিসোর্টটি ভাড়া নিয়ে এর নিচের তিনতলা অপকর্মের আখড়ায় রূপান্তর করেন। উপরের তলায় পারিবারিক বাসিন্দা থাকলেও নিচে চলত নারী দিয়ে ফাঁদ পাতার ভয়ানক পরিকল্পনা। তরুণীদের দিয়ে অতিথিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করে তাদের গোপনে ভিডিও ধারণ করতেন আলম। পরে সেই ভিডিও ফাঁসের ভয় দেখিয়ে চলত চাঁদাবাজি।

সম্প্রতি গোলাপগঞ্জের ব্যবসায়ী মুহিনুর রহমান ও তার এক বন্ধুর ওপর রিসোর্টে হামলার পর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। মুহিন জানান, রিসোর্টের একটি কক্ষে তাকে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয় এবং বিভিন্ন আপত্তিকর ভিডিও দেখিয়ে হুমকি দেওয়া হয়। হামলার ঘটনায় থানায় মামলা হলে পলাতক হন আলম ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা।

অভিযোগ রয়েছে, আলম নিজেই মাদকাসক্ত। তরুণীদের নেশাগ্রস্ত করে ভিডিও ধারণ করতেন তিনি। এসব কাজে ব্যবহার করা হতো সিলেট ও ঢাকার বিভিন্ন তরুণী, যাদের অনেকে স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রী। এছাড়াও, ঢাকার বিনোদন জগতের কয়েকজন অভিনেত্রীকেও ওই রিসোর্টে দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন একাধিক ব্যক্তি।

এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, প্রথমে তারা এসব বুঝতে পারেননি। তবে রাতে ভিআইপিদের আসা-যাওয়া, উচ্চ শব্দে গান-বাজনা, এবং নারী উপস্থিতি সন্দেহ বাড়ায়। বিশেষ দিবসগুলোতে সেখানে চলত উন্মুক্ত পার্টি।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের ধরতে ইতোমধ্যে একাধিক অভিযান পরিচালিত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। আলমের ভাই তাজুল, যিনি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত বলেও অভিযোগ রয়েছে, তিনিও গা-ঢাকা দিয়েছেন।

রিসোর্টের ফ্ল্যাটে বসবাসরত পরিবারগুলো আতঙ্কে স্থানত্যাগ করছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত আলম ও তার চক্রকে গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

Nema komentara