এই সরকার ভবিষ্যতে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়াতে বাধ্য হবে” — এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ।
তিনি বলেন, “শিশু উপদেষ্টাদের নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। তবে একটা বাস্তব উদাহরণ দেই— যদি কোনো অভিভাবক তার সন্তানের হাতে ছুরি তুলে দেয় এবং সেই শিশু যদি তা দিয়ে কাউকে খুন করে, তাহলে দায়টা কি শুধু শিশুর, নাকি তার অভিভাবকেরও? সরকারও ঠিক এমন কাজ করেছে। তারা শিশু উপদেষ্টাদের হাতে ধারালো অস্ত্র তুলে দিয়েছে, আর এখন তাদের দিয়ে সব অপকর্ম করিয়ে নিচ্ছে। অথচ মূল দায় এড়াতে চাইছে নিজেরা। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এসব অপকর্মের বিচার একদিন হবেই। তখন এই সরকারও আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়াতে বাধ্য হবে।”
সোমবার (৯ জুন) বিকেলে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার পরমতলা শব্দর খান উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ১৬নং ধামঘর ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে এক বিশাল জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কায়কোবাদ।
তিনি আরও বলেন, “আমি কোনো নেতা নই। আমি জনগণের ভাই, আপনাদের কামলা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আপনাদের সেবক হয়ে থাকতে চাই। রাজনীতি মানেই এখন শুধু নির্বাচন। আমাদের বাঁচার একমাত্র পথই নির্বাচন। এখন থেকে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে।”
নির্বাচনের বার্তা ও কায়কোবাদের আহ্বান
কায়কোবাদ তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট করে বলেন, “দোয়া করুন, ইনশাআল্লাহ বিএনপি যেন আবার সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে সরকার গঠন করতে পারে। আমরা চাই জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হোক। আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের অবসান ঘটাতে হলে বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধভাবে ক্ষমতায় আনতে হবে। সময় এখনই।”
স্থানীয় নেতাদের উপস্থিতি ও সমর্থন
এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন। আরও বক্তব্য রাখেন:
-
বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া
-
সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া
-
কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আকতারুজ্জামান সরকার
-
সদস্য সচিব এফএম তারেক মুন্সী
-
যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মান্নান সরকার
-
বিএনপি নেতা সৈয়দ তৌফিক আহমেদ
-
কাজী জুম্মন বকশী প্রমুখ।
সমাবেশে নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিলো ব্যাপক উদ্দীপনা ও সরকারবিরোধী স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষণ
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কায়কোবাদ এই বক্তব্যের মাধ্যমে আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য বিএনপির কৌশলগত বার্তা দিয়ে দিয়েছেন। তিনি একদিকে যেমন সরকারকে উদ্দেশ্য করে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, অন্যদিকে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
উপসংহার:
কায়কোবাদ-এর বক্তব্য তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে একটি নতুন উদ্দীপনা তৈরি করেছে। তবে সরকারবিরোধী এমন কঠোর ভাষার জবাব আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কীভাবে আসে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
নির্বাচনের আগেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক উত্তাপ। সামনে অপেক্ষা করছে আরও নাটকীয় মোড়।