close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ভারতকে নিজেদের অস্তিত্বের হুমকি হিসেবে দেখে পাকিস্তান

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির নতুন প্রতিবেদনে প্রকাশ—পাকিস্তান ভারতকে নিজেদের অস্তিত্বের জন্য বড় হুমকি মনে করছে। প্রতিদিনের সন্ত্রাসবাদে বিপর্যস্ত দেশটি এখন চীন ও পারমাণবিক শক্তির ওপর ন..

পাকিস্তানের অস্তিত্ব সংকটের ছায়ায় ভারত: মার্কিন প্রতিবেদনে উদ্বেগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক উত্তেজনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (DIA) কর্তৃক প্রকাশিত ‘বার্ষিক হুমকি মূল্যায়ন’ প্রতিবেদন। এতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, পাকিস্তান প্রতিবেশী ভারতকে তাদের অস্তিত্বের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে।

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, পাকিস্তান ভারতের প্রচলিত সামরিক শক্তিকে প্রতিহত করতে নিজেদের সেনাবাহিনীকে আধুনিকীকরণে জোর দিচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের উপযোগী পারমাণবিক অস্ত্র। ইসলামাবাদ এখন নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারমাণবিক সক্ষমতা বাড়ানো ও সামরিক অবকাঠামো শক্তিশালীকরণে মনোযোগী হয়েছে।

পারমাণবিক আধুনিকীকরণে পাকিস্তান

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তান তার পারমাণবিক অস্ত্রসম্ভার আধুনিক করার পাশাপাশি পারমাণবিক কমান্ড, কন্ট্রোল ব্যবস্থা ও অবকাঠামোর নিরাপত্তা জোরদার করছে। এমনকি তারা গণবিধ্বংসী অস্ত্র সংগ্রহে বিদেশি রাষ্ট্রের দিকেও ঝুঁকছে। DIA বলেছে, “এই প্রচেষ্টা পাকিস্তানকে আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকে থাকতে সহায়তা করবে।”

বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ কেবল প্রতিরক্ষা নয়, বরং একটি রাজনৈতিক বার্তাও বহন করে—পাকিস্তান চায় ভারত বুঝুক, তারা যেকোনো আগ্রাসনের জবাবে প্রস্তুত।

সন্ত্রাসবাদের ছায়ায় দগ্ধ ইসলামাবাদ

পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী হামলার মাত্রা এখনও ভয়াবহ। ২০২৪ সালে দেশটিতে প্রায় প্রতিদিনই সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালানো হলেও, ওই বছর দুই হাজার পাঁচশ’র বেশি নাগরিক সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন। এই পরিসংখ্যান পাকিস্তানের নিরাপত্তাব্যবস্থার দুর্বলতা এবং আইনের শাসনের সংকটকে নগ্নভাবে তুলে ধরে।

বিশ্লেষণে বলা হয়, পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনী একদিকে ভারতের হুমকি মোকাবিলায় মনোযোগ দিচ্ছে, অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে।

চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা এবং দ্বন্দ্ব

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, পাকিস্তানের প্রধান সামরিক সহযোগী দেশ হচ্ছে চীন। দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন সময় যৌথ সামরিক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা দ্বিপাক্ষিক কৌশলগত সম্পর্ককে শক্তিশালী করেছে।

তবে এই সম্পর্কেও ফাটল ধরেছে। চীনা নাগরিকদের ওপর পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। ২০২৪ সালে অন্তত সাতজন চীনা প্রকৌশলী পাকিস্তানে নিহত হন, যা চীনকে কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখাতে বাধ্য করে।

ইরান ও আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক

প্রতিবেদনে আরও উঠে এসেছে পাকিস্তান ও ইরানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি বিমান হামলার ঘটনা। তবে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা জানায়, দুই দেশ পরে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। অপরদিকে আফগানিস্তানের সঙ্গেও সীমান্তে সংঘর্ষ ও গোলাবর্ষণের ঘটনা ঘটে, যা প্রমাণ করে পাকিস্তান একাধিক ফ্রন্টে চাপে রয়েছে।

 

যুক্তরাষ্ট্রের এই রিপোর্ট শুধু দক্ষিণ এশিয়ার সামরিক ভারসাম্যের সংকেতই দেয় না, বরং এটি ভারতের শক্তির বিস্তারের প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের আতঙ্ক, অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা ও কৌশলগত নির্ভরতার চিত্রও স্পষ্ট করে তোলে। ইসলামাবাদ যে অস্তিত্বের সংকটে রয়েছে, তা আর গোপন কিছু নয়। পারমাণবিক শক্তির আধুনিকীকরণ এবং চীনের ওপর নির্ভরতা—সব মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় ভবিষ্যতের ভূরাজনীতি হয়ে উঠছে আরও জটিল ও বিপজ্জনক।

没有找到评论


News Card Generator