পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, নদীর পানি এখনও বিপৎসীমার নিচে থাকলেও অব্যাহত বৃষ্টি ও ঢলের কারণে বড় ধরনের বন্যার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
পাউবো সিলেট অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, গত কয়েক দিনে ভারতের উজানে বিশেষ করে চেরাপুঞ্জি ও শিলং এলাকায় প্রবল বর্ষণ হয়েছে, যার প্রভাব সরাসরি পড়ছে সিলেটের নদ-নদীতে। তিনি জানান, বৃষ্টিপাতের প্রবণতা যদি এমনভাবে চলতে থাকে, তাহলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই নদীগুলোর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে, যা বড় ধরনের বন্যায় রূপ নিতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আগামী কয়েক দিন সিলেট ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে আরও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে ভারতের মেঘালয় অঞ্চলেও বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, যা বন্যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
ইতোমধ্যে সিলেটের নিম্নাঞ্চল—বিশেষ করে গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। গোয়াইনঘাটের পর্যটন এলাকা জাফলংয়ের জিরো পয়েন্ট এবং কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথর এলাকায় নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি বেড়েছে। এসব অঞ্চলের কৃষিজমি, রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ জানিয়েছেন, এখনো সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি, তবে সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত নজরদারি করছি। যদি পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যায়, তবে স্বেচ্ছাসেবী, উদ্ধারকারী দল ও সরকারি কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত আছেন।”
উল্লেখ্য, গত ২০২২ সালের জুনে সিলেটে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল, যা লাখ লাখ মানুষকে পানিবন্দী করে ফেলেছিল। এবারও একই ধরনের পূর্বাভাসে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।
স্থানীয় প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে রাখার আহ্বান জানিয়েছে।
Nessun commento trovato