close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ভারতের সঙ্গে উত্তেজনায় পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে খাদ্য মজুদের নির্দেশ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
কাশ্মীর সীমান্তে গোলাগুলি ও কূটনৈতিক সংঘাতে ফের উত্তপ্ত ভারত-পাকিস্তান। এলওসি ঘেঁষা এলাকাগুলিতে দুই মাসের খাদ্য মজুদের নির্দেশ দিল পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীর সরকার। যুদ্ধের ছায়া কি ঘনিয়ে আসছে?..

ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের ছায়া: পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে জরুরি খাদ্য মজুদের নির্দেশ, যুদ্ধের আতঙ্ক বাড়ছে

 

দুই পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে। এমন অবস্থায় পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরের সরকার নিয়ন্ত্রণরেখা (লাইন অব কন্ট্রোল বা এলওসি) ঘেঁষা এলাকাগুলিতে দুই মাসের জন্য খাদ্য মজুদের নির্দেশ দিয়েছে। কাশ্মীর সীমান্তে চলমান গোলাগুলি, কূটনৈতিক টানাপড়েন এবং আক্রমণের আশঙ্কায় সীমান্তবাসীর মধ্যে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

 হামলা, পাল্টা অভিযোগ ও সীমান্তে গোলাগুলি

গত ২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগামে এক সশস্ত্র হামলায় নিহত হয় ২৬ জন। ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে এই হামলার জন্য দায়ী করে। যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছে।
এরপর থেকেই টানা আট রাত ধরে ভারতীয় সেনাবাহিনী দাবি করছে—এলওসি বরাবর গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত যে দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি কূটনৈতিক পদক্ষেপ, যেমন কূটনীতিক বহিষ্কার, সীমান্তে সামরিক মোতায়েন, এমনকি সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে।

 প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীর

শুক্রবার এক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণায় পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী আনোয়ার উল হক বলেন,

“এলওসি সংলগ্ন ১৩টি নির্বাচনি এলাকার জন্য দুই মাসের খাদ্য মজুদ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমাদের জনগণের জীবন ও নিরাপত্তা রক্ষা করাই এখন প্রধান লক্ষ্য।”

সরকার ইতোমধ্যে ১০০ কোটি পাকিস্তানি রুপি (প্রায় ৩৫ লাখ মার্কিন ডলার) জরুরি তহবিল ঘোষণা করেছে খাদ্য, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে।

প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, এলওসি এলাকার যাতায়াত সচল রাখার জন্য সরকার ও বেসরকারি মালিকানাধীন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে রাস্তা মেরামত ও নির্মাণের কাজও দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও সতর্কতা

বৃহস্পতিবার পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরে এক হাজারেরও বেশি মাদ্রাসা ও ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১০ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের এমন পদক্ষেপ সরাসরি যুদ্ধের আশঙ্কাকে আরও বাস্তব করে তুলেছে।

 ভারতের হুঁশিয়ারি ও পাকিস্তানের পাল্টা বার্তা

গত মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেনাবাহিনীকে “সম্পূর্ণ অভিযানের স্বাধীনতা” দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ভারতীয় সেনারা যে কোনও সময় পাল্টা আক্রমণে যেতে পারে, এমন বার্তা ক্রমেই জোরালো হচ্ছে।

অন্যদিকে, পাকিস্তান সরকার জানায়, তাদের কাছে ‘বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য’ রয়েছে যে ভারত শিগগিরই বড় ধরনের সামরিক হামলার পরিকল্পনা করছে। ইসলামাবাদ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে—

“যদি ভারত কোনো ধরনের সামরিক অভিযান চালায়, তাহলে আমরা সমুচিত জবাব দেব।”

 যুদ্ধের সম্ভাবনা ও আন্তর্জাতিক উদ্বেগ

ভারত-পাকিস্তানের মাঝে এমন উত্তেজনা প্রায়শই দেখা যায়, তবে বর্তমান পরিস্থিতির ভয়াবহতা আরও বেশি কারণ এতে জড়িত রয়েছে প্রাণহানি, কূটনৈতিক বহিষ্কার, সরাসরি সামরিক প্রস্তুতি ও জনগণের মধ্যে আতঙ্ক।

আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, দুটি পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে এমন সংঘাত দক্ষিণ এশিয়ায় চরম নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো দুই পক্ষকে শান্তিপূর্ণ সমাধানের দিকে এগোতে আহ্বান জানিয়েছে।


এলওসি ঘিরে খাদ্য মজুদ, সামরিক প্রস্তুতি, স্কুল বন্ধ—সবই এক যুদ্ধ পূর্বাভাসের স্পষ্ট ইঙ্গিত। ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক এখন এমন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে, যেখানে সামান্য ভুল পদক্ষেপেও বিশাল সংঘর্ষের সূত্রপাত হতে পারে। সামনে কী অপেক্ষা করছে, সেটি সময়ই বলে দেবে, তবে সীমান্তে এখন শুধুই আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তা।

לא נמצאו הערות