close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

ভারত পাকিস্তানের খবর: ঝিলাম নদীর পানি ছাড়ায় আজাদ কা শ্মীরে মাঝারি বন্যা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ভারত পূর্ব নোটিশ ছাড়া ঝিলাম নদীতে অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেওয়ায় পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরে হঠাৎ বন্যা দেখা দিয়েছে। মুজাফফরাবাদে জরুরি অবস্থা জারি, আতঙ্কে হাজারো মানুষ!..

ভারতের আকস্মিক পদক্ষেপে কাঁপছে আজাদ কাশ্মীর: ঝিলাম নদীর বন্যায় তাণ্ডব

ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে আরও এক নতুন সঙ্কট দেখা দিয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই ভারত পূর্ব কোনো ঘোষণা ছাড়াই ঝিলাম নদীতে বিপুল পরিমাণ পানি ছেড়ে দিয়েছে। ভারত পাকিস্তান সংক্রান্ত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এর ফলে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

বিশেষ করে আজাদ কাশ্মীরের মুজাফফরাবাদ অঞ্চলে পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে যে, কর্তৃপক্ষ দ্রুত জরুরি অবস্থা জারি করেছে। হাট্টিয়ান বালা এলাকায় পানির উচ্চতা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়েছে। মসজিদগুলোর মাইকে অনবরত সতর্কবার্তা প্রচার করা হচ্ছে। এতে জনমনে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।


আন্তর্জাতিক নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ

পাকিস্তানি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের এই আচরণ আন্তর্জাতিক আইন ও ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, এক দেশ যদি অপর দেশকে প্রভাবিত করে এমনভাবে পানি ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনে, তবে আগাম নোটিশ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু ভারত তা না করেই পানি ছেড়ে দিয়েছে, যা পাকিস্তানের জনগণের জীবন ও সম্পত্তিকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।

এই অভিযোগ আরও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে কারণ অতীতেও দেখা গেছে, যুদ্ধাবস্থায় পানি ব্যবস্থাপনায় কৌশলগত পরিবর্তন এনে শত্রুপক্ষকে দুর্বল করার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। ভারত-পাকিস্তানের এই নতুন সঙ্কট আন্তর্জাতিক মহলেও দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।


ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি: বাঁধ ধ্বংসের নজির

বিশ্লেষকরা মনে করিয়ে দিয়েছেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধেও বাঁধ ধ্বংস করে কৌশলগত সুবিধা নেওয়ার নজির আছে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ইউক্রেনের ক্রিভি রিহ শহরে বাঁধ ভেঙে প্রবল বন্যা সৃষ্টি হয় এবং কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। একইভাবে ২০২৩ সালে বিশাল একটি বাঁধ ধ্বংসের ফলে ডিনিপ্রো নদীতে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। এসব ঘটনা দেখিয়ে দেয়, কিভাবে পানি ব্যবস্থাপনাকে রাজনৈতিক ও সামরিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

ঠিক একই ধরনের শঙ্কা এখন পাক-ভারত উপমহাদেশেও তৈরি হয়েছে। ভারতের হঠাৎ পানি ছেড়ে দেওয়া নিয়ে পাকিস্তানে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে, এবং কেউ কেউ বলছেন, এটি শুধু পরিবেশগত বিপর্যয় নয়, বরং একটি সুপরিকল্পিত কৌশল।


উত্তেজনার ভবিষ্যৎ ইঙ্গিত

ভারত পাকিস্তানের সর্বশেষ সংবাদের তথ্য অনুযায়ী, ঝিলাম নদীর এই আকস্মিক বন্যার কারণে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হতে পারে। বিশেষ করে জম্মু-কাশ্মীরে সাম্প্রতিক হামলার পর যে উত্তেজনা ছড়িয়েছে, তার সাথে পানি সংক্রান্ত এই নতুন সংকট পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

বিশ্লেষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাস আরও গভীর করবে এবং সীমান্ত পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে। আগামী দিনে এ অঞ্চলের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

পাকিস্তান ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালাচ্ছে এবং সিন্ধু পানি চুক্তি লঙ্ঘনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ উত্থাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

No se encontraron comentarios