জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম সম্প্রতি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে অনুষ্ঠিত এক পথসভায় জানিয়েছেন, “বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে জনগণের সচেতন ভোট প্রয়োগের ওপর।” তিনি বলেন, “যে তরুণ প্রজন্ম জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে, যারা জুলাই অভ্যুত্থান সফল করেছে, তাদের আত্মত্যাগ যেন বৃথা না যায়।”
তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, “এই তরুণরা দলমত নির্বিশেষে জনগণকে একত্র করেছে। তারা রাস্তায় দাঁড়িয়ে স্বৈরাচার বিরোধী সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে। এখন সময় এসেছে সেই আত্মত্যাগকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার। আগামীর প্রতিটি নির্বাচনে আমাদের সবাইকে বিবেক দিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে—ভোট দিতে হবে সবচেয়ে সৎ ও যোগ্য মানুষকে। তাহলেই এই বিপ্লব সফল হবে।”
বেদনার সাথে প্রতিজ্ঞা
পথসভায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে সারজিস আলম আরও বলেন, “যে মা-বাবা সন্তান হারিয়েছেন, তারাই জানেন কী ভয়ংকর যন্ত্রণা সেটা। আমরা দেখেছি, কীভাবে একটি রাজনৈতিক নির্দেশে এক হাজারেরও বেশি তরুণ প্রাণ ঝরে গেছে। সেই রক্তের ঋণ থেকে আমরা যেন মুখ ফিরিয়ে না নিই।”
তিনি জনগণের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা বিচার চান—ফ্যাসিবাদের, নিপীড়নের, হত্যার। এই দাবিতে কোনো আপস নয়। বিচারের দাবিতে অটল থাকুন, এটিই শহীদদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা হবে।”
নেতৃত্বে রাজপথে প্রতিবাদ
পথসভাটি শেষ হওয়ার পর সারজিস আলমের নেতৃত্বে একটি মিছিল শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে অংশ নেন শতাধিক নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ। “গণতন্ত্র চাই”, “স্বৈরতন্ত্র নিপাত যাক”, “শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না”—এই ধরনের স্লোগানে মুখর ছিল পুরো মিছিল।
উপস্থিত ছিলেন অন্যরাও
এদিনের পথসভায় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক আলী নাসের খান, দিনাজপুর অঞ্চলের নীলফামারী জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আবু সায়েদ লিয়ন, এবং কিশোরগঞ্জ উপজেলা এনসিপির প্রতিনিধি আব্দুল কাইয়ুম। তারা সকলেই জনগণের মাঝে রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেন এবং বলেন, “বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গড়ার দায়িত্ব এখন মানুষের হাতে।”
সারজিস আলমের ভাষ্য অনুযায়ী, এই লড়াই শুধু রাজনৈতিক কোনো যুদ্ধ নয়, এটি ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানোর আন্দোলন। সেই আন্দোলন যেন সার্থক হয়, সেজন্য দরকার সচেতন সিদ্ধান্ত—সৎ ও জনদরদি নেতাকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করা। তাহলেই জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের আত্মত্যাগ পূর্ণতা পাবে।