বগুড়ায় ছাত্র রাজনীতিতে বড় ধাক্কা!
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ থেকে পদত্যাগ করে ১৩ জন নেতা-কর্মী আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদে যোগ দিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে শহরের এক অভিজাত রেস্তোরাঁয় আয়োজিত জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁরা নতুন সংগঠনে নিজেদের অন্তর্ভুক্তির ঘোষণা দেন।
নতুন সংগঠনে যোগ দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম রয়েছেন জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সহসভাপতি জাকারিয়া ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈকত আলী, শাজাহানপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মারুফ হোসেন, নন্দীগ্রাম উপজেলার সভাপতি গৌরব সরকার এবং সরকারি আজিজুল হক কলেজ শাখার যুগ্ম সদস্যসচিব আফ্রিদি হাসান। তাঁদের এই যোগদানে বগুড়ার ছাত্র রাজনীতিতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
অনুষ্ঠানে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের জেলা সংগঠক এ এম জেড শাহরিয়ার বলেন,
“নতুনদের আগমনে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ আরও শক্তিশালী হবে। এখানে নেতৃত্ব বিকাশের সুযোগ রয়েছে, রয়েছে গণতন্ত্রচর্চার বাস্তব প্রয়োগ। আমরা একসাথে কাজ করে একটি নতুন উদাহরণ তৈরি করতে চাই।”
পদত্যাগের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক সহসভাপতি জাকারিয়া ইসলাম বলেন,
“বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ এখন একটি লেজুড়বৃত্তিক সংগঠনে পরিণত হয়েছে। এখানে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ নেই। অথচ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদে রয়েছে প্রকৃত নেতৃত্ব ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা। আমরা স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের চর্চার জন্যই নতুন সংগঠন বেছে নিয়েছি।”
অনুষ্ঠানে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা নতুন যোগদানকারী সদস্যদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন এবং ভবিষ্যতে একসঙ্গে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন,
“কিছু নেতা-কর্মীর পদত্যাগে আমাদের সংগঠন কোনো দুর্বল হবে না। আমরা আমাদের আদর্শিক অবস্থানে অটল আছি এবং ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী সংগঠন গড়তে কাজ করে যাব।”
তবে রাজনীতির পেছনের অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, বগুড়ায় ছাত্র অধিকার পরিষদের এ ধরনের ভাঙন ভবিষ্যতে সংগঠনের অন্যান্য ইউনিটেও প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে তরুণ নেতা-কর্মীদের স্বাধীন নেতৃত্ব চর্চার আকাঙ্ক্ষা দিন দিন বাড়ছে, যা সংগঠনের প্রচলিত কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়ে উঠেছে।
একইসঙ্গে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ নিজেদের সংগঠনে নতুন রক্ত সঞ্চালন করতে পেরে ভবিষ্যতে আরও বেশি আলোচনায় আসবে।
বগুড়ার ছাত্র রাজনীতিতে এই পরিবর্তন কতটা গভীর প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে একথা নিশ্চিত — তরুণ নেতৃত্বের নতুন পথ খোঁজার এই প্রবণতা দেশের ছাত্র রাজনীতিতে নতুন বার্তা দিচ্ছে।