বয়ফ্রেন্ডকে ভিডিও কলে রেখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা, শোকে স্তম্ভিত জবি ক্যাম্পাস


জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু
শোকের ছায়া নেমে এসেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ক্যাম্পাসে। এক মর্মান্তিক ঘটনায় প্রেমঘটিত কারণে আত্মহত্যা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাবরিনা রহমান শাম্মি। রোববার (২৬ জানুয়ারি) ভোর রাতে পুরান ঢাকার কাঠেরপুল এলাকার তনুগঞ্জ লেনের একটি মেসে গলায় ফাঁস দিয়ে নিজের জীবন শেষ করেন এই তরুণী। সবচেয়ে চমকপ্রদ এবং হৃদয়বিদারক বিষয় হল যে, শাম্মি আত্মহত্যার মুহূর্তে তার বয়ফ্রেন্ডকে ভিডিও কলের মাধ্যমে সঙ্গে রেখেছিলেন।
সকাল সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশ খবর পায় যে, এক তরুণী মেসে আত্মহত্যা করেছেন। তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে। পরে, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পুলিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের ধারনা, প্রেমঘটিত কারণে এই আত্মহত্যা ঘটেছে। সাবরিনা রহমান শাম্মি, যিনি সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন, তার মরদেহ উদ্ধার হওয়ার পর তার সহপাঠীরা জানান, তাদের কাছে খবর আসে ভোর ৪টার দিকে। তারপর তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে শাম্মির বয়ফ্রেন্ডকে দেখেন, যিনি বুয়েটে পড়াশোনা করছেন। কান্নাকাটি শেষে তিনি মেস থেকে চলে যান।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, “আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, প্রেমঘটিত কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। কারণ, মেয়েটি আত্মহত্যার সময় তার প্রেমিককে ফোনে রেখে আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশ মোবাইল ফোনটি জব্দ করেছে এবং আমরা এই বিষয়ের তদন্ত করছি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মধ্যে এই ঘটনা নিয়ে গভীর শোকের ছায়া বিরাজ করছে। সহপাঠীরা শাম্মির আত্মহত্যার খবর শুনে হতবাক হয়ে পড়েছেন এবং তার পরিবারকে সমবেদনা জানাতে দ্রুত যোগাযোগ করছেন।
সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম জানান, “শাম্মি একাই একটি মেসে থাকতেন। অন্য ছাত্রীরা পাশের রুমে থাকতেন। আজ ভোর সাড়ে ৪টায় আমরা তার মরদেহ উদ্ধার করি এবং ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
এ ঘটনায় পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শোকের আবহ বিরাজ করছে। তার সহপাঠীরা এবং শিক্ষকেরা শাম্মির বিদায়ে গভীর দুঃখ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন। এই মর্মান্তিক ঘটনা তরুণদের মধ্যে সম্পর্কের প্রতি আরও সচেতনতা এবং সজাগতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছে।
এটি একটি নীরব আহ্বান যে, সম্পর্কের মধ্যে সঠিক যোগাযোগ এবং মানসিক সমর্থন ছাড়া কখনও নিজেদের উপেক্ষা করবেন না, বিশেষত যখন পরিস্থিতি কঠিন হয়।
コメントがありません