দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে এক অনন্য উদাহরণ স্থাপন করতে যাচ্ছে সরকার। ১৮ জুলাই দিনটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম, যা সোমবার (৩০ জুন) রাতে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশ পায়।
এই ঘোষণা দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন দাবিতে রাজপথে থাকা শিক্ষার্থীদের সাহসিকতা ও ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের স্বীকৃতিস্বরূপ সরকার এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার পরিকল্পনা করছে।
শফিকুল আলম তার পোস্টে লিখেছেন,সরকার আগামীকাল (১ জুলাই) স্মরণীয় দিন হিসেবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তারিখের ক্যালেন্ডার ঘোষণা করতে যাচ্ছে। সেখানেই ১৮ জুলাই দিনটি ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হবে। এ দিনটি শিক্ষার্থীদের সাহসী প্রচেষ্টার প্রতি উৎসর্গ করা হবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিগত বছরগুলোতে শিক্ষা খাতে বৈষম্য, টিউশন ফি বৃদ্ধি, ইনফ্রাস্ট্রাকচার সংকট এবং শিক্ষকদের প্রতি অবিচারের বিরুদ্ধে নিয়মিতভাবে আওয়াজ তুলে আসছে। বিশেষ করে গত বছরের কিছু আন্দোলন ছিল নজিরবিহীন, যেখানে শিক্ষার্থীরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তাদের দাবিগুলো উপস্থাপন করে দেশব্যাপী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।
ঘোষণায় শফিকুল আলম আরও উল্লেখ করেন,বলা হচ্ছে মব তৈরি হচ্ছে, আমি এটাকে মব বলছি না, বলছি প্রেসার গ্রুপ। এটা তৈরি হয়েছে সাংবাদিকতার ব্যর্থতার কারণেই। কারণ, জনগণের ন্যূনতম সিভিল লিবার্টি বিগত ১৫ বছরে রক্ষা করা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, এই পরিস্থিতির ফলে জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই তাদের কণ্ঠস্বর উচ্চকিত হয়েছে, এবং এরই ফল হিসেবে একটি চাপ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠী গঠিত হয়েছে। এই প্রেসার গ্রুপ গণমাধ্যমের ব্যর্থতা, রাজনৈতিক পক্ষপাত ও সামাজিক অবিচারের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করছে।
তার পোস্টে আরও এক বিস্ফোরক মন্তব্য উঠে আসে, যেখানে তিনি দাবি করেন,গত বছরের ২৮ জুলাই দেশের শীর্ষ সাংবাদিকরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রশ্ন করেছেন— ‘এদের খুন করেন’, ‘পুলিশ কেন গুলি করছে না?’ কেউ কি এর প্রতিবাদ করেছে? এরা তো শীর্ষ মিডিয়া হাউজের সাংবাদিক!
এই বক্তব্য দেশব্যাপী আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তিনি ইঙ্গিত দেন, সাংবাদিকতার এই দায়িত্বহীন আচরণই আজকের পরিস্থিতির অন্যতম কারণ। বর্তমানে নতুন রাজনৈতিক সরকারকে সামনে রেখে সাংবাদিক ও বিভিন্ন গোষ্ঠী আবারও তাদের পজিশন ঠিক করতে চাইছে, অথচ পূর্বের ব্যর্থতার কোনও দায় তারা নিচ্ছে না।
সরকার আগামীকালই (১ জুলাই) এই ঘোষণা সংবলিত ক্যালেন্ডার প্রকাশ করবে বলে জানিয়েছেন প্রেসসচিব। দিনটিকে ঘিরে ইতিমধ্যেই শিক্ষার্থীদের মাঝে উৎসাহ এবং প্রত্যাশা দেখা দিয়েছে।
১৮ জুলাইয়ের এই স্বীকৃতি নতুন এক শিক্ষানীতি চর্চার বার্তা দিচ্ছে। এই দিনটিকে কেন্দ্র করে হয়তো ভবিষ্যতে শিক্ষা ব্যবস্থায় আরও বৃহৎ সংস্কার এবং ছাত্রস্বার্থকেন্দ্রিক নীতিনির্ধারণের সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এই দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে। আন্দোলন যখন গঠনমূলক হয়, তখন তা সমাজকে বদলে দেওয়ার বড় শক্তি—এই বার্তাই যেন পৌঁছে দিচ্ছে সরকার।
 'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  
  
 
		 
				 
			



















 
					     
			 
						 
			 
			 
			 
			 
			 
			