বাংলাদেশি পণ্যের জন্য চীনের বিশাল বাজার: শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা ২০২৮ পর্যন্ত
বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ! ২০২৮ সাল পর্যন্ত চীনের বিশাল বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পাচ্ছে বাংলাদেশের পণ্য। ফলে দেশীয় শিল্প ও রপ্তানি খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী ডিং শুয়েশিয়াং এ সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেছেন।
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক আরও শক্তিশালী
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) চীনের হাইনান প্রদেশের বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে চীনের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ওয়ান-চায়না নীতি মেনে চলার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
ডিং শুয়েশিয়াং বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেন। অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আরও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে বলে আমরা আশাবাদী।’
অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি বিশেষ করে চীনের তৈরি পোশাক কারখানা, বৈদ্যুতিক যানবাহন, হালকা যন্ত্রপাতি, উচ্চ প্রযুক্তির ইলেকট্রনিকস, চিপ উৎপাদন এবং সৌর প্যানেল শিল্প বাংলাদেশে স্থানান্তরের বিষয়ে সহায়তা চান।
চীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ণ সমর্থন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় এবং বিনিয়োগ, বাণিজ্য, সাংস্কৃতিক সম্পর্ক উন্নয়ন এবং জনগণের মধ্যে পারস্পরিক বিনিময় বৃদ্ধিতে একমত হয়।
বাংলাদেশের অনুরোধে চীনের বিশেষ বিবেচনা
ড. ইউনূস চীনের অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পগুলোর সুদের হার ৩ শতাংশ থেকে ১-২ শতাংশে নামিয়ে আনার অনুরোধ করেন এবং কমিটমেন্ট ফি মওকুফ করার আহ্বান জানান। চীন বাংলাদেশে মোংলা বন্দরের আধুনিকায়ন এবং দাশেরকান্দি পয়োনিষ্কাশন প্রকল্পের উন্নয়নেও অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দেয়।
বাংলাদেশি ফল ও কৃষিপণ্যের জন্য নতুন বাজার
বাংলাদেশের কৃষিপণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রেও বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে। চীন ইতোমধ্যে বাংলাদেশের আম রপ্তানির জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যার ফলে এ বছর থেকেই গ্রীষ্মকালে বাংলাদেশি আম চীনে রপ্তানি শুরু হবে। এছাড়া চীন কাঁঠাল, পেয়ারা এবং জলজ পণ্য আমদানি করতে আগ্রহী, যা বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের পরিধি আরও সম্প্রসারিত করবে।
চীনের বাজারে প্রবেশাধিকার: বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনার নতুন দ্বার
এই শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা বাংলাদেশের রপ্তানি খাতকে চাঙ্গা করবে এবং দেশীয় উৎপাদনকারীদের আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রাখবে। আগামী বছরগুলোতে চীনের সঙ্গে আরও বাণিজ্য সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ, যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
		
				
			


















