জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মন্তব্য করেছেন যে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিদ্যমান প্রকৃত সংকট কোনো একক দল বা ব্যক্তির নয়, বরং এটি আদর্শিক আধিপত্যবাদের এক গভীর দ্বন্দ্ব। তার মতে, গত পাঁচ দশক ধরে দেশ মূলত 'মুজিববাদ' এবং 'মওদুদীবাদ' নামক দুটি ধারার প্রক্সি রাজনীতির শিকার, যা ভারত ও পাকিস্তানের ভূ-রাজনৈতিক প্রভাবের ফল।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক দীর্ঘ পোস্টে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এই বিশ্লেষণ তুলে ধরেন। তিনি জোর দেন যে, এই দ্বৈত আধিপত্যের কবলে পড়ে রাষ্ট্রের মূল স্তম্ভ—সংস্কৃতি, অর্থনীতি এবং প্রশাসনিক কাঠামো ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়েছে। এটি কেবল ক্ষমতার লড়াই নয়, বরং রাষ্ট্রকাঠামোর গভীর ক্ষয়ের কারণ।
এনসিপি সমন্বয়ক তার লেখায় দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক দুর্বলতা, বিশেষত পরিবারতন্ত্রের দিকে ইঙ্গিত করেন। তিনি উল্লেখ করেন, পরিবারতন্ত্রের শেকলে জর্জরিত বিএনপি তার ঐতিহাসিক জনসমর্থন হারানোর পর প্রাতিষ্ঠানিক আশ্রয়ের দিকে ঝুঁকলেও, নতুন প্রজন্মের হাত ধরে পরিবারতন্ত্রের গণ্ডি ভেঙে জনপদের রাজনীতিতে ফিরে আসার একটি সম্ভাবনা এখনো রয়েছে। ভারতের কংগ্রেসের মতো দলও বর্তমানে এই ধরনের সংস্কারের পথ খুঁজছে বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।
পাটওয়ারীর মতে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটকে কেবল ব্যক্তি (যেমন বেগম জিয়া বা তারেক জিয়া) বা দলের সংকট হিসেবে দেখাটা একটি দীর্ঘদিনের ভুল। তিনি বিষয়টিকে ব্যক্তিনির্ভর ব্যাখ্যার ঊর্ধ্বে এক গভীরতর রাষ্ট্রগত সংকট হিসেবে অভিহিত করেন।
তিনি আরও লেখেন, ২০২৪ সালের গণ-আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল এই প্রক্সি-নির্ভর রাজনীতি থেকে দেশকে মুক্ত করে সাম্য, মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটি নতুন রাষ্ট্রীয় কাঠামো নির্মাণ করা। তবে, আর্থিক সুবিধা ও পদ-পদবির বিনিময়ে ছাত্রসমাজকে জামায়াতের হাতে তুলে দেওয়ার মতো দুঃখজনক ঘটনা ঘটায়, দেশ আবারও পুরনো প্রক্সি রাজনীতির ঘূর্ণাবর্তে ফিরে গেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।



















