বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার ঝড় তুলেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। সম্প্রতি ভারতের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ওয়াল’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেন, "বাংলাদেশে এখন আর আওয়ামী লীগ বলে কোনো রাজনৈতিক দল কার্যত নেই।" তার এই মন্তব্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনকে নাড়িয়ে দিয়েছে।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “দলটির যে ক’জন নেতা ছিলেন, তারা সবাই এখন দেশের বাইরে। চুরি করা অর্থ নিয়ে তারা বিদেশে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে। এদেশে তাদের আর কোনো বাস্তবিক সাংগঠনিক উপস্থিতি নেই।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে এখন আর আওয়ামী লীগের কোনো মিছিল দেখা যায় না। কিছু ব্যক্তি হয়ত মাঝে মধ্যে অন্য কোনো দলে যোগ দিচ্ছে, কিন্তু মূলধারার আওয়ামী লীগ কার্যত বিলুপ্ত।
দুর্নীতি, গুম ও দমননীতির অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “এই দলটি গত ১৬ বছর ধরে দেশজুড়ে একটি ভয়ংকর শাসন কায়েম করেছিল—যেখানে বিরোধীদের গুম, খুন, দমন, দুর্নীতির বন্যা বইয়ে দিয়েছিল। এখন সাধারণ মানুষ তাদের কোনো সহানুভূতি দেখাচ্ছে না। মানুষের ঘৃণাই এখন তাদের প্রধান অর্জন।
প্রেস সচিবের মতে, আওয়ামী লীগ কেবল রাজনৈতিকভাবে নয়, নৈতিকভাবেও দেউলিয়া। “তারা এখন বিদেশ থেকে অনলাইনে কিছু হম্বিতম্বি করে, বলার চেষ্টা করে কিছু একটা। কিন্তু বাস্তবে দেশে তাদের অস্তিত্ব নেই,” বলেন তিনি।
শফিকুল আলম আরো বলেন, “জুলাই-আগস্ট মাসে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটেছে, সেগুলোর বিচার এই সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার। সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমরা আশাবাদী, খুব শিগগিরই এ বিচার শেষ হবে।
তিনি বলেন, “দেশবাসী এত দিন ধরে যা সহ্য করেছে, তার একটা জবাবদিহি তো দরকার। যারা অপরাধ করেছে, তারা যত বড় নেতা-নেত্রীই হোক, তাদের আইনের আওতায় আসতেই হবে।
আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে শফিকুল আলম বলেন, “এখন তারা বিভিন্ন জায়গায় আহ্বান জানাচ্ছে— ‘আসুন, আন্দোলন করি, মিছিল করি’। কিন্তু সাড়া দেয় কে? একটা-দুটো ছেলে হয়ত কোথাও কিছু বলছে, তাতেই খুশি। এটাই যদি এত বড় দলের অবস্থা হয়, তাহলে বুঝতে হবে, তারা আর দেশে নেই— মানসিক, রাজনৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে।
তিনি বলেন, “আমি সন্দেহ করি, এই দলটি আর কখনো বাংলাদেশের মানুষের মাঝে ফিরতে পারবে কিনা। জনগণ তাদের ভুলে গেছে।
প্রধান উপদেষ্টার একজন ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তার এমন বক্তব্য নিঃসন্দেহে দেশের রাজনীতিতে একটি বড় বার্তা পাঠিয়েছে। যদিও এখনো আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি, তবে ভবিষ্যতের রাজনৈতিক সমীকরণে এই বক্তব্য নিঃসন্দেহে বড় প্রভাব ফেলবে।