রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন নিয়ে নানা আলোচনা ও আশার পরও প্রকল্পের কার্যক্রম আবারও থমকে গেছে।
২০২৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর দৈনিক চট্টগ্রাম খবর-এ এই বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের পর বিষয়টি নতুন গতি পায়।
এরই ধারাবাহিকতায় ২২ জানুয়ারি ২০২৫ ইং তারিখে বাঘাইছড়ি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের জন্য নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন ও সীমানা চিহ্নিত করা হয়। এতে স্থানীয়দের মাঝে আশার সঞ্চার হয় যে এবার বুঝি বাস্তবে রূপ পেতে যাচ্ছে বহু প্রতীক্ষিত এই সেবা।
কিন্তু আজ তিন মাস পেরিয়ে গেলেও প্রকল্পে আর কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়নি। নির্মাণ কাজের কোনো প্রস্তুতি, অবকাঠামো উন্নয়ন বা প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সংগ্রহ কোনোটিই শুরু হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে প্রকল্পটি আবারও প্রশাসনিক জটিলতায় থেমে যাচ্ছে কি না, তা নিয়ে জনমনে সংশয় তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সীমানা নির্ধারণ করে চলে যাওয়া ছাড়া আর কিছুই হয়নি। আমরা আবারও হতাশ হচ্ছি। বাঘাইছড়ির মতো দুর্গম ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ফায়ার সার্ভিস থাকা অতি জরুরি, এটা বারবার বলার পরও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না।
ইতি পূর্বে বাঘাইছড়িতে এমন বড় বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে যা জানান দেয় যে, বাঘাইছড়িতে আসলে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
বাঘাইছড়ি বাজার, বনাঞ্চল ও পাহাড়ঘেরা বসতি এলাকা নিয়মিতভাবে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকিতে থাকে। ফায়ার সার্ভিস না থাকায় আগুন লাগলে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে, ফলে প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি ঘটে।
বাঘাইছড়ি চৌমুহনি ও উপজেলা মার্কেট কমিটির সভাপতি নিজাম উদ্দীন বাবু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা শুধু শুনে আসছি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন হবে, কিন্তু দৃশ্রমান কোন কার্যক্রম আমরা দেখছি না। একের পর এক আমরা বাঘাইছড়ি বাসী দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েও আমরা তার কোন প্রতিফলন দেখছি না। আমি প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার নিকট অনুরোধ জানাবো যতদ্রুত সম্ভব এই ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ করলে বাঘাইছড়িবাসী অনেক উপকৃত হবেন।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সহকারী পরিচালক (অতিরিক্ত) মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান আনসারী জানান, সীমানা নির্ধারণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে ঠিকই, তবে এটি নির্ধারণ করা হয়েছে পৌরসভা ড্রেন এর কাজ করছিলো, যাতে করে তারা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সীমানার মধ্যে না করে তাই আমরা সীমানা বরাবর ফ্ল্যাগ দেয়।
তিনি আরো বলেন, সরকার পরিবর্তনের কারণে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন এর কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে এখন কেন্দ্রীয় পর্যায়ের বরাদ্দ ও প্রকল্প অনুমোদনের প্রক্রিয়া চলছে। আমাদের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সবধরনের ফলোআপ করা হচ্ছে। এর মধ্যে সাজেকে অস্থায়ী একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে স্থানীয়রা বলছেন, শুধু পরিদর্শন করে ফিরে গেলে হবে না বাস্তবায়নের পদক্ষেপ না নিলে জনগণের আস্থা ফেরানো কঠিন হবে। প্রকল্পটির দ্রুত অগ্রগতি ও নির্মাণ কাজ শুরুর জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন তারা।