বাড্ডা-সাতারকুল রোডে জনদুর্ভোগের চিত্র: শিক্ষার্থী থেকে বৃদ্ধ—নেই কোনো নিরাপত্তা!..

Sumon Hawlader avatar   
Sumon Hawlader
রাজধানীর উত্তর বাড্ডা থেকে সাতারকুল পর্যন্ত প্রধান সড়কটি জনদুর্ভোগ ও অব্যবস্থাপনার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষার্থী থেকে বৃদ্ধ, সকলের জীবন এই সড়কে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে।..

 

সুমন হাওলাদারঃ

রাজধানীর উত্তর বাড্ডা থেকে সাতারকুল পর্যন্ত প্রধান সড়কটি এখন যেন জনদুর্ভোগ ও অব্যবস্থাপনার প্রতীক। একসময় যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ এই রুট বর্তমানে রূপ নিয়েছে গর্ত আর জলাবদ্ধতার ভয়াল এক চিত্রপটে। প্রতিদিন হাজারো মানুষ—শিক্ষার্থী থেকে বৃদ্ধ—চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন এই পথ ধরে। কাদা, ধুলা, গর্ত, যানজট আর অচল ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনার কারণে এলাকাবাসীর জীবন এখন চরম দুর্বিষহ।

সড়ক নয়, যেন ধ্বংসস্তূপ

পথচারী বা যানবাহন চালক—কেউই স্বস্তিতে নেই এই সড়কে। বর্ষা এলেই এই দুরবস্থার চিত্র হয়ে ওঠে আরও করুণ। রাস্তায় জমে থাকে হাঁটুসমান পানি, আর কোথাও কোথাও খোয়া ওঠা পিচঢালা অংশের নিচে তৈরি হয়েছে বিপজ্জনক গর্ত। যেন এই পথ দিয়ে যান চলাচল নয়, বরং পুরনো কোনো খালে হাঁটছে মানুষ।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইব্রাহিম বলেন, “এই রাস্তা দিয়ে চলা মানে প্রতিদিন যুদ্ধ করা। কত গাড়ির চাকা ভেঙেছে, কত মানুষ গর্তে পড়ে আহত হয়েছে—তার হিসাব নেই।”

অটোর দখলে রাস্তাঘাট, ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত

রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটো রিকশার অনিয়ন্ত্রিত চলাচল এবং রাস্তায় পার্কিং যেন আরেক বিপদ। দোকানের সামনেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকে এসব যানবাহন, ফলে ক্রেতারা দোকানে প্রবেশ করতেই পারেন না।

উত্তর বাড্ডার এক ব্যবসায়ী জানান, “আমার দোকানের সামনে সবসময় দুই-তিনটা অটো দাঁড়িয়ে থাকে। কাস্টমার আসতে পারে না। বললে ওরাই আবার রেগে যায়।”

শিক্ষার্থীরা ঝুঁকিতে, নেই ট্র্যাফিক ব্যবস্থা

এই সড়ক ব্যবহার করে প্রতিদিন অসংখ্য স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী। কিন্তু রিকশা, অটো, বাইকের এলোমেলো গতি এবং ফুটপাত না থাকার কারণে তাদের চলাচল হয়ে উঠেছে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কোনো ট্রাফিক ব্যবস্থা নেই, নেই কোনো নিয়ন্ত্রণ বা নজরদারি।

এক শিক্ষার্থী জানায়, “প্রতিদিন স্কুল যেতে ভয় লাগে। রিকশা এমনভাবে চলে, মনে হয় এখনই ধাক্কা খেয়ে পড়ে যাব।”

প্রশাসনের উদাসীনতা নিয়ে প্রশ্ন

সড়কটির এই করুণ অবস্থা শুধুমাত্র অব্যবস্থাপনার ফসল নয়, বরং নাগরিক জীবনের নিরাপত্তা ও মর্যাদার ওপর সরাসরি আঘাত। দ্রুত সংস্কার ও নিয়ন্ত্রণ না এলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা, নিরবচ্ছিন্ন নজরদারি এবং জনগণের কথা শোনার আন্তরিকতা।

নাগরিকদের প্রশ্ন—"ঢাকার উত্তর অংশের মানুষ কি উন্নয়নের বাইরে পড়ে গেল?"

এ প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে এখনই, কারণ রাস্তা আর সময়—দুটোই শেষ হয়ে আসছে।

Ingen kommentarer fundet