close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

আত্মসমর্পণ নয়, রক্তের বিনিময়ে যুদ্ধবিরতি’ — হামাসের সাহসী জবাব ইসরায়েলকে..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইসরায়েল যুদ্ধ থামাতে নয়, আত্মসমর্পণ করাতে চায়—এই অভিযোগে যুদ্ধবিরতির শর্ত প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস। গাজা ও পশ্চিম তীরে চলমান আগ্রাসনে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পুরো মধ্যপ্রাচ্য।..

গাজা থেকে রক্তের বার্তা: 'আমরা যুদ্ধবিরতির জন্য প্রস্তুত, আত্মসমর্পণের জন্য নয়'

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার আগুনে ঘি ঢালছে ইসরায়েল-হামাস সংঘাত। সর্বশেষ উত্তেজনায় নতুন করে আলোচনায় এসেছে যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব, যার শর্ত ছিল হামাসের অস্ত্রসমর্পণ। তবে এই প্রস্তাবকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস। গোষ্ঠীটি বলছে, যুদ্ধবিরতির নামে ইসরায়েল মূলত ফিলিস্তিনিদের দমিয়ে রাখতে ও আত্মসমর্পণে বাধ্য করতে চায়।

মিশরের প্রস্তাব, হামাসের প্রতিক্রিয়া
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মিশরের মধ্যস্থতায় হামাসের কাছে একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাঠিয়েছে ইসরায়েল। তবে সেই প্রস্তাবে হামাসের অস্ত্র পরিত্যাগের কথা উল্লেখ থাকায় সেটিকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে ঘোষণা করেছে গোষ্ঠীটি।

হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা সামি আবু জুহরি বলেন, “প্রস্তাবটি মূলত প্রতিরোধ আন্দোলনকে নিরস্ত্রীকরণ করার পরিকল্পনা। আমরা এটি গ্রহণ করতে পারি না। যুদ্ধবিরতির শর্ত হওয়া উচিত গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের অবসান এবং দখলদার বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার।”

তিনি আরও জানান, “আমাদের স্পষ্ট অবস্থান হচ্ছে, অস্ত্র নিয়ে কোনো আলোচনা নয়। আমরা দখলমুক্ত ফিলিস্তিন চাই, আত্মসমর্পণ নয়।”

ইসরায়েলের শর্ত: অস্ত্র ফেলে দাও, শান্তি পাবে
অন্যদিকে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, হামাসকে পরাজিত না করলে যুদ্ধ বন্ধ করা সম্ভব নয়। তেল আবিবের মতে, ‘যুদ্ধবিরতি’ কেবল তখনই কার্যকর হবে যখন হামাস পুরোপুরি অস্ত্র ফেলে দেবে এবং গাজার ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ শেষ হবে।

গাজায় বোমারু বিমানের ভয়াল গর্জন
ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে গাজা উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায়। ১৪ এপ্রিল সোমবার হামলা হয় খান ইউনিস, শুজাইয়া ও তুফাহ এলাকায়। ভয়াবহ বিমান হামলায় বহু ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে আরও অনেকের লাশ।

শুধু গাজায় নয়, পশ্চিম তীরেও দখলদার বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তুলকারেম শহরে বাড়ি, দোকান ও একটি ক্যাফেতে তল্লাশির নামে বোমা হামলা চালানো হয়েছে। নুর শামস শরণার্থী শিবির থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়েছে শত শত ফিলিস্তিনিকে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ
পশ্চিম তীরে চলমান আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। তারা এটিকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ বলে আখ্যা দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে।

অচলাবস্থা: যুদ্ধ নয়, শান্তির জন্য দরকার সম্মানজনক সমাধান
দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতে বারবার যুদ্ধবিরতির চেষ্টা হলেও কখনোই স্থায়ী সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। বিশ্লেষকদের মতে, যুদ্ধবিরতির নামে যদি আত্মসমর্পণের চাপ সৃষ্টি করা হয়, তবে তা কখনোই টেকসই শান্তি আনবে না।

গাজায় আজও বোমা পড়ে, শিশু-কিশোরদের লাশ কাঁধে করে কবর দেয় তাদের পরিবার। আর সেই বাস্তবতা থেকেই হামাসের জবাব—“আমরা যুদ্ধ থামাতে চাই, তবে সম্মান রক্ষার বিনিময়ে—not at the cost of surrender!

No comments found