আন্তর্জাতিক আদালতে বিস্ফোরক অভিযোগ: 'দারফুরে রক্তপাতের মূল পৃষ্ঠপোষক আরব আমিরাত!'—সুদানের সরাসরি অভিযোগ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
দারফুরে মাসালিত জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার জন্য সরাসরি সংযুক্ত আরব আমিরাতকে দায়ী করলো সুদান। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের শুনানিতে উপস্থাপন করা হলো বিস্ফোরক প্রমাণ ও যুক্তি।..

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তোলপাড়: দারফুর গণহত্যায় আরব আমিরাতের সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনলো সুদান

হেগ, ১০ এপ্রিল – বিশ্ববাসীকে চমকে দিয়ে সরাসরি গণহত্যায় জড়িত থাকার গুরুতর অভিযোগ আনলো আফ্রিকান দেশ সুদান। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) নেদারল্যান্ডসের হেগে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)-এর এক শুনানিতে, সুদানের প্রতিনিধিরা স্পষ্টভাবে জানান যে, দারফুর অঞ্চলে মাসালিত জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যা কোনোভাবেই আরব আমিরাতের সহায়তা ছাড়া সম্ভব হতো না।

আরএসএফ-এর পেছনে আরব আমিরাতের সহায়তা

সুদানের পক্ষ থেকে আদালতে বক্তব্য প্রদান করেন ভারপ্রাপ্ত বিচারমন্ত্রী মুয়াবিয়া ওসমান। তিনি বলেন, “র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর কাছে অস্ত্র ও সরাসরি লজিস্টিক সহায়তা প্রদান করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এটি চলমান গণহত্যার প্রধান চালিকা শক্তি।”

সুদানের অভিযোগ অনুযায়ী, আরব আমিরাত যে কেবল অতীতে সহায়তা দিয়েছে তা নয়, বরং বর্তমানে চলমান সংঘাতে এখনো সক্রিয়ভাবে সহায়তা করছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

গণহত্যা কনভেনশনের লঙ্ঘন

খার্তুমের দাবি, সংযুক্ত আরব আমিরাত জাতিসংঘের গণহত্যা কনভেনশন অনুযায়ী তার আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতা পালন করছে না। তারা শুধু নিরব দর্শক নয়, বরং সরাসরি সমর্থন ও সম্পৃক্ততার মাধ্যমে একটি জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দিচ্ছে।

সুদান বলেছে, এই সহিংসতায় কেবল গণহত্যা নয়, ধর্ষণ, লুটপাট, হত্যা এবং ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি ঘটেছে—সবই আরব আমিরাতের সহায়তায় সশস্ত্র গোষ্ঠী আরএসএফ ও মিত্র মিলিশিয়াদের মাধ্যমে।

স্বাধীন তদন্তেও মিলেছে প্রমাণ

এই অভিযোগ শুধু সুদানের মুখেই সীমাবদ্ধ নয়। গত বছর, রাউল ওয়ালেনবার্গ সেন্টার পরিচালিত একটি স্বাধীন তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, “দারফুর অঞ্চলে মাসালিত জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানে বিশ্বাসযোগ্য ও সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত গণহত্যা।” সেই তদন্তেও আরএসএফ এবং তার মিত্রদের বিরুদ্ধে শক্ত প্রমাণ পাওয়া গেছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া কী হবে?

এই অভিযোগ সামনে আসার পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনার ঝড় উঠেছে। আরব আমিরাত এই অভিযোগ অস্বীকার করে কী প্রতিক্রিয়া জানায়, সেটিই এখন মূল প্রশ্ন। কারণ আন্তর্জাতিক আদালতে প্রমাণিত হলে এটি হবে একটি দৃষ্টান্তমূলক ঘটনা, যেখানে একটি শক্তিশালী উপসাগরীয় রাষ্ট্রকে যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার দায়ে পড়তে হতে পারে।

শেষকথা

আফ্রিকার ভূখণ্ডে আবারও রক্ত ঝরছে, আর সেই রক্তঝরার পেছনে আন্তর্জাতিক শক্তির সম্পৃক্ততা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সুদান। এখন আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের রায়ই নির্ধারণ করবে—এই অভিযোগ রাজনৈতিক প্রচারণা, না কি সত্যিকার অর্থে এক ভয়াবহ বাস্তবতা।

Inga kommentarer hittades


News Card Generator