close
ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!
আগারগাঁওয়ের জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে এখনো করুণভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১০৩ জন আন্দোলনে চোখে গুলিবিদ্ধ আহত ব্যক্তি। কারও এক চোখ, কারও দুই চোখেই একাধিক গুলি লেগে তারা আজ হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। আহতরা অভিযোগ করেছেন, তাদের চিকিৎসা আশানুরূপ হচ্ছে না। এক আহতের মন্তব্য, 'আমরা কি তাহলে এই ‘24-এর আন্দোলনে শরিক হয়ে ভুল করলাম?'
আহতদের দাবি, উপদেষ্টাদের প্রথম কাজ হওয়া উচিত ছিল তাদের সুচিকিৎসা এবং পুনর্বাসন নিশ্চিত করা। কিন্তু এখনো বহু শহিদ পরিবার এবং আহতরা সাহায্যের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। আহতদের বক্তব্য, 'দেশে এত সম্পদশালী মানুষ থাকা সত্ত্বেও কেউ আমাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে না। আমরা মাসের পর মাস পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে হাসপাতালে ধুঁকে ধুঁকে মরছি।' তারা প্রশ্ন তুলেছেন, এই অবহেলা কি তাদের আন্দোলনে অংশগ্রহণের মূল্য?
সড়ক অবরোধ ও দাবিসমূহ:
জানুয়ারির শেষের দিকে সুচিকিৎসাসহ বিভিন্ন দাবিতে আগারগাঁওয়ের জাতীয় চক্ষু হাসপাতাল ও পঙ্গু হাসপাতালের সামনের সড়কে বিক্ষোভে নামে আহতরা। রাস্তা অবরোধের পর উপদেষ্টাদের আশ্বাসে তারা সড়ক ছেড়ে দেয়। তাদের প্রধান দাবিগুলো ছিল:
আহত ও শহিদদের হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের পূর্ণাঙ্গ বিচার।
ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুসারীদের বিভিন্ন পদ থেকে অপসারণ ও গ্রেফতার।
আহতদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে বাস্তবায়ন।
রাষ্ট্রীয় সম্মাননা এবং আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
চিকিৎসার সর্বোচ্চ সুবিধা এবং আর্থিক অনুদান বৃদ্ধি।
আহত ও শহিদদের পরিবারের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, 'দাবি পূরণ না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।'
আহতদের করুণ গল্প:
১৩ বছরের তানিম বায়েজিদ, মুন্সীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। এক চোখে সম্পূর্ণ অন্ধ। তার মা তাহমিনা আক্ষেপ করে বলেন, 'আমার অবুঝ বাচ্চাটার ভবিষ্যৎ কী হবে?'
১১ বছরের তামিম মাহমুদ, সিলেটের গোবিন্দগঞ্জের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী। বাইরের কোলাহল দেখতে গিয়ে চোখে গুলিবিদ্ধ হয়। তার মা জানান, 'ডাক্তার বলেছেন, অন্য চোখেও সমস্যা হতে পারে।'
১২ বছরের সাকিবুল হাসান, আন্দোলন দেখতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়। একাধিক অস্ত্রোপচারের পরও চোখের আলো ফেরেনি।
১৫ বছরের আব্দুর রহিম, ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী, অভাবের তাড়নায় থাইগ্লাসের দোকানে কাজ করত। ১৯ জুলাই গুলিবিদ্ধ হয়ে ডান চোখে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আর আলো ফেরানো সম্ভব নয়।
১৮ বছরের বাকপ্রতিবন্ধী সেলিম মিয়া, দুইবার চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছে। তার শরীরে এখনো ৫০-৬০টি ছররা গুলি বিঁধে আছে। তার মা সেলিনা বেগম বলেন, 'কথা বলতে পারে না, গায়ে অনেক যন্ত্রণা হয়।'
ভোলার বিল্লাল হোসেন, ডান চোখে ২০ শতাংশ দৃষ্টিশক্তি অবশিষ্ট, বাম চোখ পুরোপুরি অন্ধ। আসন্ন সোমবার তার বাম চোখে কৃত্রিম চোখ বসানো হবে।
No comments found



















