close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

আল–আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ঢুকে হামলা চালাল ইসরায়েলিরা

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জেরুজালেম দিবসের মিছিলের আড়ালে আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে হামলা চালিয়েছে উগ্র ইসরায়েলিরা। মুসল্লি, শিশু, দোকানদার — কাউকে ছাড়েনি; জাতিসংঘ অফিসেও হামলার অভিযোগ। পুলিশের উপস্থিতিতেও ঘটেছে সহিংসতা।..

আল–আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ঢুকে হামলা চালাল ইসরায়েলিরা: পবিত্র স্থানে ভয়াবহ সহিংসতা, জাতিসংঘ কার্যালয়েও হামলার অভিযোগ

পবিত্র আল–আকসা মসজিদ আবারও সহিংসতার শিকার। সোমবার, ২৬ মে, জেরুজালেম দিবসের মিছিলের সুযোগে উগ্রপন্থী ইসরায়েলিরা প্রবেশ করে আল–আকসা মসজিদের প্রাঙ্গণে এবং সেখানে অবস্থানরত ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের ওপর সরাসরি হামলা চালায়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা-র খবরে বলা হয়েছে, শুধু মসজিদ প্রাঙ্গণই নয়, হামলাকারীরা ঢুকে পড়ে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (UNRWA) কার্যালয়ের ভেতরেও।

এ ঘটনার সময়, পূর্ব জেরুজালেমের মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতে অবস্থানকারী সাধারণ ফিলিস্তিনি জনগণ—বিশেষ করে দোকানদার, পথচারী, এমনকি স্কুলগামী শিশুরাও হামলার মুখে পড়েন। এই উগ্র গোষ্ঠী প্রকাশ্যে "আরবদের মৃত্যু হোক" এবং "তোমাদের গ্রাম জ্বলে যাক" জাতীয় উস্কানিমূলক স্লোগান দেয়। এসময় তাদের অনেককেই ফিলিস্তিনি অধিবাসীদের গায়ে থুতু ছিটাতে, গালাগাল করতে ও জোরপূর্বক ঘরে প্রবেশের চেষ্টা চালাতে দেখা যায়।

ইসরায়েলি পুলিশের উপস্থিতিতে হামলা, নীরবতা নিয়েই প্রশ্ন

আল জাজিরার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এ ধরনের বার্ষিক মিছিলকে ঘিরে প্রতিবারই উত্তেজনা ছড়ায়। তবে এ বছর তা যেন সীমা ছাড়িয়ে যায়। মিছিলটি জেরুজালেমের পুরোনো শহরের সংকীর্ণ অলিগলি পেরিয়ে মুসলিম–অধ্যুষিত এলাকা পর্যন্ত পৌঁছায়। শহরজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকলেও সহিংসতা ঠেকানো সম্ভব হয়নি।

বিশেষ করে UNRWA-এর কার্যালয়ে হামলার বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলে গুরুতর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। সংস্থাটির পশ্চিম তীরের সমন্বয়কারী রোলান্ড ফ্রিডরিশ জানিয়েছেন, ডজনখানেক ইসরায়েলি উগ্র মিছিলকারী কোনো বাধা ছাড়াই ইসরায়েলি পুলিশের সামনেই মূল ফটক পেরিয়ে জাতিসংঘ কার্যালয়ে প্রবেশ করে।

আল–আকসার প্রতি দমননীতি নাকি সুপরিকল্পিত উস্কানি?

ফিলিস্তিনি নেতারা এ ঘটনাকে একটি সুপরিকল্পিত উস্কানিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। আল-আকসা মসজিদ মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্র স্থান। বারবার এই স্থানকে ঘিরে সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়া, সেখানে হামলা চালানো ও সাধারণ মানুষের ওপর বর্বরতা নতুন কিছু নয়, তবে আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রাঙ্গণে হামলা অভূতপূর্ব।

এএফপি-র একজন সাংবাদিক জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল থেকে অন্তত দুই ইসরায়েলি যুবককে আটক করতে দেখা গেছে। তবে বাকি হামলাকারীরা নির্বিঘ্নে এলাকা ত্যাগ করে। এই ঘটনায় ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও তীব্র প্রশ্ন উঠেছে।

১৯৬৭ সালের দখল, ২০২৫-এ সহিংস উদযাপন

পূর্ব জেরুজালেম ১৯৬৭ সালে ছয় দিনের যুদ্ধের সময় দখল করে ইসরায়েল। এরপর থেকেই অঞ্চলটি তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই দখলের স্মরণে প্রতিবছর ২৬ মে ‘জেরুজালেম দিবস’ হিসেবে পালিত হয় এবং বড় মিছিলের আয়োজন করা হয়। কিন্তু এ মিছিল এখন আর কেবল উদযাপন নয়, হয়ে উঠেছে সংঘাত আর সহিংসতা ছড়ানোর মঞ্চ।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও প্রশ্ন

এ ঘটনাকে ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে নিন্দার ঝড় উঠছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো জাতিসংঘ অফিসে হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ওআইসি (OIC), এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এ ঘটনার পূর্ণ তদন্ত দাবি করেছে।

ফিলিস্তিনি জনগণ ও নেতারা বলছেন, এই ধরনের হামলা শুধু ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর নয়, জাতিসংঘের মর্যাদার ওপরও আঘাত। যদি নিরাপত্তা বাহিনী এমন বর্বর হামলার সময় নীরব থাকে, তবে তা আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

Nenhum comentário encontrado


News Card Generator