আজ নয়াপল্টনে বিএনপির ৩ অঙ্গ সংগঠনের সমাবেশ, ১৫ লাখ জমায়েতের আশা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
আজ ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির তিন অঙ্গ সংগঠন ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’। চারটি বিভাগ থেকে আগত প্রায় ১৫ লাখ তরুণ-তরুণীর উপস্থিতি..

আজ রাজধানী ঢাকার নয়াপল্টনে বসছে বিএনপির অন্যতম বৃহৎ কর্মসূচি—'তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ'। সমাবেশটি আয়োজন করেছে বিএনপির তিন শক্তিশালী অঙ্গ সংগঠন—বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল। বিকেল ৩টার পর শুরু হতে যাওয়া এই আয়োজনকে ঘিরে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় এলাকায় ইতোমধ্যে প্রস্তুতির সব কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

দলটির নেতারা জানিয়েছেন, সমাবেশে ঢাকা, সিলেট, ফরিদপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে বিপুল সংখ্যক তরুণ-তরুণী অংশ নিচ্ছেন। আয়োজকদের প্রত্যাশা, উপস্থিতির সংখ্যা ১৫ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে। নয়াপল্টনের আশপাশের এলাকাজুড়ে ইতিমধ্যে ব্যাপক জনসমাগম শুরু হয়েছে, এবং দুপুর গড়াতেই এলাকাটি যেন পরিণত হয়েছে এক তরুণ তরুণীর মিলনমেলায়।

এই সমাবেশের মাধ্যমে বিএনপি তারুণ্যকে নতুনভাবে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করতে চায় বলে জানিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতারা। তারা বলেন, তরুণরাই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ, আর তাদের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠাই বিএনপির বর্তমান লড়াইয়ের অন্যতম লক্ষ্য।

সমাবেশের প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি এ আয়োজনে অংশ নিয়ে দেশের তরুণ প্রজন্মের সামনে তুলে ধরবেন বিএনপির রাষ্ট্রচিন্তা, রাজনীতির ভবিষ্যৎ রূপরেখা এবং দলের কৌশলগত পরিকল্পনা। তার এই ভাষণকে ঘিরে সমাবেশস্থলে ব্যাপক আগ্রহ ও অপেক্ষা লক্ষ্য করা গেছে।

দলটির শীর্ষ নেতারা মনে করছেন, তারেক রহমানের বক্তব্য বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় দিক নির্দেশনা হিসেবে কাজ করবে। এছাড়া সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গ সংগঠনের অসংখ্য নেতা।

এর আগে, পুরো মে মাসজুড়ে তরুণদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করতে ধারাবাহিক কর্মসূচি পরিচালনা করে বিএনপির এই তিন অঙ্গ সংগঠন। দেশব্যাপী আটটি বড় শহরে সেমিনার ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। চট্টগ্রাম, খুলনা, বগুড়া, রাজশাহী, বরিশালসহ বিভিন্ন শহরে ইতোমধ্যে সফলভাবে কর্মসূচি শেষ করেছে তারা। আজকের সমাবেশ সেই ধারাবাহিকতার সর্বশেষ ও সবচেয়ে বড় আয়োজন।

নয়াপল্টনের এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে বিরাট উৎসাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সকাল থেকেই ঢাকার বিভিন্ন রাস্তায় মিছিল, স্লোগান ও ব্যানার-পোস্টার নিয়ে যুবকরা সমাবেশস্থলের দিকে রওনা হচ্ছেন। মেট্রোপলিটন পুলিশ, র‍্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপির এই আয়োজন আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে দলটির কৌশলগত এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তরুণদের মধ্য থেকে একটি শক্তিশালী ভোটার ও ক্যাম্পেইন ভিত্তি গড়ে তুলতেই এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

অনেকেই মনে করছেন, এই সমাবেশের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টির কৌশল নিয়েছে। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে যে বড় একটি অংশ বর্তমানে রাজনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয় বা হতাশ, তাদের পুনরায় রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করতে এই উদ্যোগ।

সব মিলিয়ে নয়াপল্টনে আজকের সমাবেশ শুধু একটি রাজনৈতিক কর্মসূচিই নয়, বরং দেশের তারুণ্যের শক্তিকে ঘিরে ভবিষ্যৎ রাজনীতির এক শক্তিশালী ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

No comments found