close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

আইপিএল শিরোপা উদযাপনে মানতে হবে যেসব নির্দেশনা

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
আরসিবির শিরোপা উদযাপনে প্রাণহানির পর বিসিসিআই জারি করল কড়া গাইডলাইন। ভবিষ্যতে অনুমতি ছাড়া প্রকাশ্য কোনো উদযাপন নয়। থাকবে মাল্টিলেয়ার নিরাপত্তা ও কঠোর সরকারি শর্ত।..

২০২৫ আইপিএল ছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (আরসিবি) ইতিহাসে এক মাইলফলক। দীর্ঘদিনের অপেক্ষার পর প্রথমবারের মতো শিরোপা ঘরে তুলতেই উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো বেঙ্গালুরু। কিন্তু সেই আনন্দ মুহূর্তেই রূপ নেয় এক ভয়ংকর দুঃস্বপ্নে—শিরোপা উদযাপনের সময় পদদলিত হয়ে প্রাণ হারান ১১ জন, আহত হন অন্তত ৫০ জন মানুষ।

এই মর্মান্তিক ঘটনার অভিঘাতে পুরো ভারতীয় ক্রীড়াঙ্গন শোকাহত। সাধারণ ভক্ত থেকে শুরু করে ক্রীড়া বিশ্লেষক—সবারই প্রশ্ন, এমন উদযাপনে কি নিরাপত্তার বিষয়টি উপেক্ষিত ছিল? এই প্রশ্নের উত্তরে এবার কঠোর অবস্থানে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে–কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিসিসিআই সচিব দেবজিত সাইকিয়া বলেন,আমরা বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছি। ভবিষ্যতে যেন এর পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে জন্য প্রতিটি ঝুঁকি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, এখন থেকে কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি আইপিএল জয়ের পর প্রকাশ্যে উদযাপন করতে চাইলে বিসিসিআইয়ের লিখিত অনুমোদন লাগবে। এছাড়াও মানতে হবে কঠোর কিছু নিরাপত্তাবিধি।

বিসিসিআই ইতোমধ্যে গঠন করেছে তিন সদস্যের একটি বিশেষ কমিটি। এই কমিটি ভবিষ্যতের জন্য নিরাপত্তা গাইডলাইন প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকবে।

৪ জুন, বেঙ্গালুরুতে ফিরেই কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া আরসিবি দলের সদস্যদের সংবর্ধনা দেন বিধান সৌধে। এরপর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে বিশাল সমাবেশের পরিকল্পনা নেওয়া হয়।

বেঙ্গালুরু ট্রাফিক পুলিশ আগেই জানিয়ে দিয়েছিল, রোড প্যারেডের কোনো অনুমতি দেওয়া যাবে না। তবুও আরসিবি ফ্র্যাঞ্চাইজি প্রকাশ্যে উদযাপনের ঘোষণা দেয়।
শেষ মুহূর্তে প্যারেড বাতিল হলেও ততক্ষণে প্রায় ২ লাখের বেশি ভক্ত স্টেডিয়ামের চারপাশে ভিড় করে ফেলেছিলেন। অতিরিক্ত ভিড় এবং দুর্বল সমন্বয়ের ফলে ঘটে যায় ভয়াবহ পদদলন।

ঘটনার জেরে আরসিবির মার্কেটিং প্রধান এবং ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান ডিএনএ এন্টারটেইনমেন্টের দুই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এছাড়া কর্ণাটক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি ও কোষাধ্যক্ষ পদত্যাগ করেন। কর্ণাটক সরকার বিসিসিআই ও আরসিবি—উভয়কে দায়ী করে কড়া সমালোচনা করে।

বিসিসিআইয়ের এ সিদ্ধান্ত কেবল একটি দুর্ঘটনার প্রতিক্রিয়া নয়, বরং ভবিষ্যতের ক্রিকেট সংস্কৃতিতে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দেওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ভক্তদের জীবন যেন উদযাপনের নামে বিপন্ন না হয়, সে দায় এবার ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড কাঁধে তুলে নিচ্ছে।

আইপিএল মানেই উন্মাদনা। কিন্তু সেই উন্মাদনা যেন প্রাণ কেড়ে না নেয়, সেদিকে নজর দিতে বাধ্য হচ্ছে বিসিসিআই। আরসিবির প্রথম শিরোপার আনন্দ তাই এক ভয়াবহ শিক্ষা দিয়ে গেল ক্রিকেট দুনিয়াকে।

Nessun commento trovato