close
ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!
আগাম আলুতে বাজারে ধস: লোকসানের বোঝা নিয়ে দিশেহারা কৃষক, সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি


আলুর ভরা মৌসুম শুরুর দেড় মাস আগেই মাঠ থেকে আগাম আলু তুলতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকেরা। কিন্তু ফলন ভালো হলেও ন্যায্যমূল্যের অভাবে কৃষকদের মধ্যে হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে। ঋণের চাপ সামলাতে অনেক কৃষক পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, আর কেউ কেউ লোকসানের ভয়ে আলু তোলা বন্ধ রেখেছেন।
বামন গ্রামের কৃষক সিরাজুল বলেন, “ঋণ করে আলু চাষ করেছি। কিন্তু আলুর দাম এমন কম যে পাওনাদারদের টাকা দিতে পারছি না।” আরেক কৃষক আব্দুল লতিফ জানান, “গত বছর কেজিপ্রতি আলু ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হলেও এবার তা ১৮-২০ টাকায় নেমেছে। খরচও তুলতে পারছি না।”
ব্যাপক লোকসানের হিসাব
ইমামপুর গ্রামের কৃষক আশরাফ সরকার ৬২ শতক জমিতে আলু চাষ করে ২২ হাজার ২০০ টাকা লোকসান করেছেন। তিনি জানান, “মাঠে এখনো আলু আছে। লোকসানের ভয়ে তুলতে সাহস পাচ্ছি না।”
অন্যদিকে, কালাই উপজেলার দুলাল মিয়া জানান, “১৮ বিঘা জমির আলু তুলতে গেলেও লোকসান হবে। ২২ টাকা কেজি খরচ হলেও ২০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।”
বাজারে কেন এত দরপতন?
পুনট বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী মাহফুজার রহমান বলেন, “আলুর সরবরাহ বেশি হওয়ায় দাম পড়ে গেছে। আমরা ১৮-২০ টাকা দরে কিনে মাত্র ১ টাকা লাভে বিক্রি করছি।”
এক ক্রেতা আবু বক্কর জানান, “এক সপ্তাহ আগে ৬০ টাকায় কেনা আলু এখন ২২ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।”
কৃষি বিভাগের আশ্বাস
জয়পুরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মজিবুর রহমান জানান, “সময়মতো আলুর দাম বাড়বে। বিদেশি বাজারেও আলুর চাহিদা রয়েছে।” তবে চাষিরা এ আশ্বাসে ভরসা রাখতে পারছেন না।
কৃষকদের দাবি
জয়পুরহাট জেলায় ৪৩,৫০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি। উৎপাদন ভালো হলেও বাজার ব্যবস্থাপনার অভাবে চাষিরা লাভের মুখ দেখছেন না। কৃষকেরা দ্রুত ন্যায্যমূল্যের নিশ্চয়তা ও সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনার দাবি জানিয়েছেন।
শেষ কথা
কৃষি অর্থনীতির এ সঙ্কট কাটাতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। ন্যায্যমূল্যের নিশ্চয়তা না থাকলে কৃষকেরা চাষাবাদে আগ্রহ হারাতে পারেন, যা ভবিষ্যতে খাদ্য উৎপাদনে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
Geen reacties gevonden