মধ্যপ্রাচ্য যেন এক বিস্ফোরণের অপেক্ষায়। ইরান আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়েছে, তারা আবারও ইসরায়েলের ওপর সশস্ত্র হামলা চালাতে চলেছে। আর এবার শুধু যুদ্ধ নয়—এই হামলার দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে বিশ্বের মানুষের সামনে তুলে ধরার পরিকল্পনাও করছে তেহরান।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর একটি সরকারি ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া পোস্টে বলা হয়েছে:
“আগামী প্রতিক্রিয়া আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী, বিস্তৃত এবং দর্শনীয় হবে। আমরা বিশ্ববাসীকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি—এই ঘটনাটি সরাসরি দেখার জন্য প্রস্তুত থাকুন।”
বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘোষণাটি শুধুই সামরিক হুমকি নয়—এটি একধরনের মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধও। ইরান সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বকে বুঝিয়ে দিচ্ছে, তারা শুধু রণক্ষেত্রে নয়, তথ্য ও প্রভাবের ময়দানেও সক্রিয়।
এই ঘোষণার ঠিক কয়েকদিন আগে, ১৩ জুন ভোররাতে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী ইরানের রাজধানী তেহরানসহ অন্তত আটটি শহরে সমন্বিত বিমান হামলা চালায়।
এই হামলায়:
-
৭৮ জন নিহত
-
প্রায় ৩০০ জন আহত
-
এবং ইরানের শতাধিক সামরিক স্থাপনায় ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি হয়
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, এই হামলা ছিল গত কয়েক বছরে ইসরায়েলের সবচেয়ে সমন্বিত এবং বিস্তৃত সামরিক অভিযানগুলোর একটি।
ইরান বলছে, তারা এখনো পূর্ণভাবে জবাব দেয়নি। বরং, তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রচারের মাধ্যমে নিজের প্রতিক্রিয়া বিশ্বদরবারে তুলে ধরতে চায়। এটি কেবল সামরিক অভিযান নয়, বরং একধরনের কূটনৈতিক কৌশল এবং শক্তি প্রদর্শনের বার্তা।
ইরানি বিশ্লেষকদের মতে, এই প্রতিক্রিয়ার মূল উদ্দেশ্য শুধু ইসরায়েল নয়। যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো এবং অন্যান্য পশ্চিমা জোটের প্রতিক্রিয়া পর্যালোচনা করাও এর লক্ষ্য। বিশেষ করে মার্কিন ডিফেন্স স্যাটেলাইট, অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম এবং গোয়েন্দা প্রযুক্তির আচরণ বুঝেই ইরান তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে চায়।
এই ঘোষণার পরেও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে সরাসরি কোনো বিবৃতি আসেনি। তবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ‘উচ্চ সতর্কতা’ অবস্থা বজায় রাখতে সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে। সীমান্ত এলাকায় সেনা মোতায়েন বাড়ানো হয়েছে এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও আপগ্রেড করা হয়েছে।