দেশের রাজনৈতিক ময়দান ফের উত্তপ্ত। এর মাঝেই নতুন বিতর্কে আগুন ঢাললেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা দ্য কার্টার সেন্টারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক শেষে তিনি বলেন, "আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হবে কি না, সেটা বিএনপির বিষয় নয়, বরং দেশের জনগণ ও নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত।"
এই মন্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোড়ন তুলেছে। মঈন খান সাফ জানিয়ে দেন, বিএনপি কখনোই নিষিদ্ধকরণের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। তবে জনগণ যদি মনে করে আওয়ামী লীগ দেশকে স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়েছে, তাহলে নিষিদ্ধ করার মত সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশন বা সরকার নিতে পারে।
তিনি আরও জানান, কার্টার সেন্টারের ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তারা বিশেষভাবে আগ্রহ দেখিয়েছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে কি না এবং অংশ নিলে কোন প্রক্রিয়ায় আসবে—তা জানতে।
মঈন খানের ভাষায়, "বাংলাদেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনের একমাত্র পথ হচ্ছে অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। সরকার যত বিলম্ব করবে, দেশ ততই অস্থিতিশীল হবে।"
বৈঠকে বিএনপির পক্ষে অংশগ্রহণ করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল। এ দলে ছিলেন ড. আবদুল মঈন খান ছাড়াও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মোহাম্মদ ইসমাইল জবিউল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, ও চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার।
প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন জোনাথন স্টোনস্ট্রিট, যিনি কার্টার সেন্টারের ডেমোক্রেসি প্রোগ্রামের সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর। তার সঙ্গে ছিলেন তারা শরিফ, মাইকেল বালদাসারো (ডেটা সায়েন্টিস্ট), সাইরাহ জাইদি, ড্যানিয়েল রিচার্ডসন এবং স্থানীয় মূল্যায়ন বিশেষজ্ঞ কাজী শহীদুল ইসলাম।
বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, এ ধরনের বৈঠক শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান স্পষ্ট করে না, বরং আন্তর্জাতিক মহলকে দেশের বাস্তব পরিস্থিতি বোঝার সুযোগও করে দেয়।
এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি এখনো নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত না জানালেও, তারা আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে এবং রাজনৈতিক সমীকরণে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করছে।
এখন দেখার বিষয়, এই বিতর্কিত মন্তব্যের পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কী প্রতিক্রিয়া আসে এবং নির্বাচন কমিশনের অবস্থান কী হয়।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এই মন্তব্য নতুন করে উত্তেজনা ও গুঞ্জনের জন্ম দিয়েছে, যেখানে আগামী নির্বাচন ঘিরে সব পক্ষই নিজ নিজ অবস্থান মজবুত করতে মরিয়া।
 'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  
  
 
		 
				 
			



















 
					     
			 
						 
			 
			 
			 
			 
			 
			