close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

২২ জুন চীন সফর যাচ্ছে বিএনপির উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণে আগামী ২২ জুন বেইজিং সফরে যাচ্ছে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের একটি প্রতিনিধি দল। নেতৃত্বে রয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সফরটি কূটনৈতিক প..

বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আগামী ২২ জুন চীনের বেইজিং সফরে যাচ্ছে। এই সফরকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে তৈরি হয়েছে উত্তেজনা, বিশ্লেষণ এবং নানা জল্পনা-কল্পনা। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণে এ সফরের নেতৃত্ব দেবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সফর-সংশ্লিষ্ট প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল চীনের দূতাবাসে যান এবং সেখানে দেশটির ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত লিউ ইউইন-এর সঙ্গে বৈঠক করেন। এই বৈঠকটি ছিল উষ্ণ, সৌহার্দ্যপূর্ণ এবং কূটনৈতিক গুরুত্বে ভরপুর।

চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক অনেক পুরনো হলেও রাজনৈতিক দলীয় স্তরে এমন সফর বরাবরই বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। বিশেষ করে যখন একটি প্রধান বিরোধী দল চীনের মতো পরাশক্তির কাছ থেকে সরাসরি আমন্ত্রণ পায়, তখন তা শুধু সৌজন্য সফর নয় — বরং ভবিষ্যতের নীতিনির্ধারণী সম্পর্ক গঠনের একটি দিকচিহ্ন হিসেবেও দেখা হয়।

এই সফরে রাজনৈতিক আদান-প্রদান, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার, ভবিষ্যতের পারস্পরিক সহযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। চীনও রাজনৈতিক বৈচিত্র্য এবং বৈশ্বিক বন্ধুত্ব নীতির অংশ হিসেবে এ ধরনের সফরকে গুরুত্ব দিয়ে থাকে।

এই সফরে অংশ নিচ্ছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা। প্রতিনিধি দলে রয়েছেন:

  • মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর – মহাসচিব (দলের পক্ষে নেতৃত্বে)

  • মির্জা আব্বাস – স্থায়ী কমিটির সদস্য

  • গয়েশ্বর চন্দ্র রায় – স্থায়ী কমিটির সদস্য

  • সেলিমা রহমান – স্থায়ী কমিটির সদস্য

  • ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন – কেন্দ্রীয় নেতা

  • জহির উদ্দিন স্বপন – চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা

  • ইসমাঈল জবিউল্লাহ্ – কেন্দ্রীয় নেতা

  • অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া – কেন্দ্রীয় নেতা

  • মওদুদ আহমেদ পাভেল – মিডিয়া সেল আহ্বায়ক

সফরে চীনের রাজনৈতিক ব্যবস্থা, পার্টি টু পার্টি সম্পর্ক, অর্থনৈতিক উন্নয়ন মডেল এবং দক্ষিণ এশিয়ায় ভূরাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সূত্র বলছে, চীন বিএনপির ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ভুমিকা এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দলটির দৃষ্টিভঙ্গিও জানতে চাচ্ছে।

অন্যদিকে, বিএনপিও দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের ভূমিকা এবং বাংলাদেশে তার কার্যক্রম নিয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে পারে। সফরের সময় প্রতিনিধি দল চীনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করবেন বলে জানা গেছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সফরের মাধ্যমে বিএনপি একদিকে যেমন চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে পারবে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক প্ল্যাটফর্মেও দলের গুরুত্ব বাড়বে। কারণ বিশ্ব রাজনীতিতে চীনের প্রভাব যেভাবে বাড়ছে, তাতে এই ধরনের সম্পর্ক রক্ষা করা যে কোনো দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

চীনের সঙ্গে বিএনপির এই সফর কেবল একটি সৌজন্য সফর নয়— এটি ভবিষ্যতের কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশের ভিত্তি হয়ে উঠতে পারে। চীন যদি রাজনৈতিকভাবে বিএনপিকে আন্তর্জাতিক মহলে গ্রহণযোগ্যতা দেয়, তাহলে তা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

২২ জুনের এই সফর বিএনপির জন্য শুধু একটি আন্তর্জাতিক সফর নয়, বরং তাদের কৌশলগত অবস্থান স্পষ্ট করার একটি বড় সুযোগ। রাজনৈতিক মঞ্চে, বিশেষ করে নির্বাচনের প্রাক্কালে আন্তর্জাতিক মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটাই যেন প্রমাণ করতে যাচ্ছে এই সফর।

No comments found