বাংলাদেশ সরকারের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে তামাকজাত দ্রব্যের দাম ও কর বৃদ্ধি করার প্রস্তাব ভোক্তাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। এই প্রস্তাবের মাধ্যমে সরকারের উদ্দেশ্য হলো জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন এবং রাজস্ব আয়ের বৃদ্ধি। তবে এর প্রভাব নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করছেন বিভিন্ন মহল।
নতুন বাজেটে সিগারেটের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। নিম্ন স্তরের ১০ শলাকার সিগারেটের খুচরা মূল্য ৪৫ টাকা থেকে ৫০ টাকা করা হয়েছে, যা প্রতি শলাকায় ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়েছে। মধ্যম স্তরে দাম ৬৭ টাকা থেকে ৭০ টাকা, উচ্চ স্তরে ১১৩ থেকে ১২০ টাকা এবং প্রিমিয়াম স্তরে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সম্পূরক শুল্কের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন এসেছে। নিম্ন স্তরে শুল্ক ৫৮% থেকে ৬০% করা হয়েছে এবং অন্যান্য স্তরে ৬৫% থেকে ৬৫.৫% করা হয়েছে। এছাড়াও, জর্দা এবং গুলের দামেও পরিবর্তন এসেছে। প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার দাম ৪৫ টাকা থেকে ৪৮ টাকা এবং গুলের দাম ২৩ টাকা থেকে ২৫ টাকা করা হয়েছে, তবে শুল্ক অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
বাজেটে তামাকজাত দ্রব্যের দাম ও কর বৃদ্ধির প্রস্তাব ভোক্তাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। স্বাস্থ্য সচেতন ভোক্তারা মনে করেন, এই পদক্ষেপ ধূমপান নিরুৎসাহিত করবে এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য সুফল বয়ে আনবে। তবে নিম্ন আয়ের ভোক্তারা উদ্বিগ্ন যে, দাম বৃদ্ধির ফলে তাদের উপর আর্থিক চাপ বাড়বে এবং তারা বিকল্প সস্তা তামাকপণ্যের দিকে ঝুঁকতে পারেন।
তামাকবিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা বলেছে, তামাকপণ্যের দাম বৃদ্ধির হার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তুলনায় যুক্তিযুক্ত হয়নি। তারা মনে করেন, সিগারেটের দাম ও কর আরও বাড়ানো হলে ধূমপান হ্রাস পাবে এবং সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও, তারা পরামর্শ দিয়েছেন যে, কর কাঠামো আরও কার্যকরভাবে প্রণয়ন করা উচিত যাতে ধূমপান নিরুৎসাহিত করা যায়।
বাংলাদেশে তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করছে। ধূমপানের কারণে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন ক্যান্সার, হৃদরোগ এবং শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকার এই সমস্যাগুলো মোকাবেলা করতে তামাকজাত পণ্যের দাম ও কর বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে তামাকজাত দ্রব্যের দাম ও কর বৃদ্ধির প্রস্তাব ভোক্তাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। স্বাস্থ্য সচেতন ভোক্তারা এই পদক্ষেপকে ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও, নিম্ন আয়ের ভোক্তারা আর্থিক চাপের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বিশেষজ্ঞরা আরও কার্যকর কর কাঠামোর মাধ্যমে ধূমপান নিরুৎসাহিত করার পরামর্শ দিয়েছেন। সরকারের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন এবং রাজস্ব বৃদ্ধির আশা করা হচ্ছে।