ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে টানা প্রবল বর্ষণের ফলে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে গত দুই দিনে অন্তত ৩০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, মণিপুর এবং মিজোরাম। স্থানীয় প্রশাসনের আশঙ্কা, প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
আবহাওয়ার মারাত্মক অবনতির ফলে আসামের অন্তত ১২টি জেলায় প্রায় ৬০ হাজার মানুষ ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এর মধ্যে ছয়টি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। টানা বৃষ্টিতে ব্রহ্মপুত্রসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
শুক্রবার ও শনিবার দুই দিনে দুর্যোগজনিত কারণে প্রাণ হারিয়েছেন মোট ৩০ জন। শুক্রবার মারা যান ১৬ জন, আর শনিবার আরও ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুধুমাত্র আসামেই শনিবার পাঁচজন এবং অরুণাচল প্রদেশে প্রাণ হারান নয়জন।
অরুণাচল প্রদেশে মৃত্যুর ঘটনাগুলো ছিল সবচেয়ে মর্মান্তিক। আনন্দবাজার পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, পূর্ব কামেং জেলায় প্রবল বৃষ্টির সময় একটি রাস্তা ধসে পড়লে একটি গাড়ি গভীর খাদে পড়ে যায়। এতে একই পরিবারের সাত সদস্যসহ মোট নয়জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া, রাজ্যের অন্যান্য স্থানে ভূমিধসে আরও দুইজন প্রাণ হারিয়েছেন।
আসামের কামরূপ মেট্রোপলিটন এলাকায় ভূমিধস ও বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (ASDMA) জানিয়েছে, শুক্রবার গুয়াহাটির বন্ডা এলাকায় ভূমিধসে তিন নারী মারা যান। এই দিন শহরটিতে ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা গত ৬৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
প্রবল বৃষ্টিপাত ও বন্যার কারণে গুয়াহাটি ও মেঘালয়ের তুরার মধ্যকার একটি জাতীয় সড়কের অংশ পানির তোড়ে ভেসে গেছে। ফলে আসাম ও মেঘালয়ের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
ভারতের আবহাওয়া দপ্তর আসামের কিছু অংশে রেড ও অরেঞ্জ অ্যালার্ট এবং বাকি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে অরেঞ্জ ও ইয়েলো অ্যালার্ট জারি করেছে। দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলোতে উদ্ধার ও সহায়তা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।



















