উপজেলা চেয়ারম্যান মুকুলকে নিয়ে নতুন আলোচনায় উ'ত্তাপ – স্থানীয় বিরোধে ৪৮ জনের নামে মা'মলা, মহাসড়কে নেতাকর্মীদের জড়ো হয়ে কর্মসূচি!....

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আতাউর রহমান মুকুলের উপর হামলার ঘটনায় চাঞ্চল্য! চাঁদা না দেওয়ায় হামলা, মারধর ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ—অভিযুক্ত ৪৮ জন। প্রতিবাদে নেতাকর্মীদের সড়ক অবরো..

নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা তুঙ্গে। বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপির মহানগর শাখার সাবেক সহ-সভাপতি আতাউর রহমান মুকুলের উপর হামলার ঘটনায় পুরো এলাকা থমথমে। ঘটনার পরপরই দায়ের করা মামলায় বিএনপির সোনারগাঁ উপজেলা সহসভাপতি বজলুর রহমানসহ মোট ৪৮ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মামলার খবর ছড়িয়ে পড়তেই ঢাকামুখী ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবরোধ করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।

ঘটনার সূত্রপাত গত ২৯ জুন দুপুরে। বন্দর উপজেলার হরিপুরে ৪১২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের টিআই কাজের চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য হাজির হন সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স দেওয়ান এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি মোস্তাকুর রহমান, সোবহান ও কাউছার। কিন্তু সেখানে আগে থেকেই ওঁত পেতে থাকা অভিযুক্তরা অতর্কিতে তাদের গাড়ি ঘিরে ফেলে।

মামলার এজাহার অনুযায়ী, বিএনপি নেতা বজলুর রহমানের নেতৃত্বে একদল লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে গাড়ি থামিয়ে টাকা দাবি করে। চাঁদা না দিলে কাজ করতে দেওয়া হবে না—এমন হুমকি দিয়ে গাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে নামানো হয় আতাউর রহমান মুকুলকে। এরপরই শুরু হয় নির্যাতন। লোহার রড দিয়ে মাথায় ও পায়ে আঘাত করে তাকে রক্তাক্ত করা হয়।

শুধু মারধরেই ক্ষান্ত হয়নি হামলাকারীরা। এজাহারে বলা হয়, আতাউর রহমান মুকুলের ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি আইফোন এবং সঙ্গে থাকা ১ লাখ ২০ হাজার নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয় তারা। পুরো ঘটনাটি ঘটানো হয় প্রকাশ্যে, একটি বিদ্যুৎ প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষরের সময়। ঘটনাটি এলাকাজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।

মামলায় নাম উল্লেখ করা হয়েছে ১৮ জনের, এবং অজ্ঞাত ২০ থেকে ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন—সোনারগাঁ উপজেলার কুতুবপুর এলাকার মৃত মতিউর রহমানের ছেলে বজলুর রহমান, রাসেল, কেরা কামাল, গোলজার হোসেন, নাদিম, আব্দুল করিম নোমান, আকাশ, সেলিম, শামিম, শাহাজালাল, হযরত আলী, রাজ মিয়া, সাইফুল, হানিফ, আক্তার, ইসমাইল, খালেকসহ আরও অনেকে।

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী জানান, ঘটনার দিনই মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করেছে, তবে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং হামলায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ সক্রিয় রয়েছে।

ঘটনার পরপরই বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা রাস্তায় নেমে আসেন। সোমবার সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বন্দর অংশে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেন তারা। বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং বিচার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। এতে করে গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয় এবং সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়ে।

এই ঘটনায় নারায়ণগঞ্জে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বিশ্লেষকরা। বিএনপির নেতাকর্মীদের দাবি, এ হামলা একটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। তারা এটিকে দলীয় নেতাদের দমন করার চেষ্টা বলেও অভিহিত করেছেন।

সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুলের উপর হামলার ঘটনা শুধু ব্যক্তি আক্রমণ নয়, বরং এটি একটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার নগ্ন প্রকাশ। চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও খোলা রাস্তায় নির্যাতনের এ ঘটনা দেশের প্রশাসনিক ব্যর্থতা এবং রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের স্পষ্ট দৃষ্টান্ত। এই ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন এলাকাবাসীসহ সচেতন মহল।

Комментариев нет