উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক নিয়ে যা জানালেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ঘোষণা ইস্যুতে রাতেই জরুরি বৈঠকে বসছে উপদেষ্টা পরিষদ—আইসিটি আইনের নতুন অধ্যাদেশ প্রস্তাব, সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগ, ভারত-বাংলাদেশ মিডিয়া টানাপড়েনসহ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার আভাস দিলেন ..

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ সংক্রান্ত সরকার ঘোষিত বিবৃতিকে কেন্দ্র করে দেশের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক পরামর্শক সংস্থা উপদেষ্টা পরিষদ জরুরি বৈঠকে বসছে—এমনই তথ্য জানালেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

শনিবার যশোরের কেশবপুরের পাথরা পল্লী উন্নয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে সরকারের দেওয়া বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতেই আজ রাতে উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। তবে মূল আলোচ্য হবে আইসিটি আইনের অধ্যাদেশ প্রস্তাবনা।”

শফিকুল আলম আরও জানান, এ বিষয়টি সরকারের জন্য ‘জরুরি’ বলেই আজ রাতেই সভা আয়োজন করা হয়েছে।

সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগ নিয়ে তদন্ত

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগ নিয়েও মন্তব্য করেন প্রেস সচিব। তিনি জানান, এই ঘটনার পেছনে কারা জড়িত—তা নিয়ে অনুসন্ধান চলছে এবং ইতোমধ্যে কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাকিদেরও আইনের আওতায় আনা হবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।

ভারত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ

প্রেস সচিব ভারতের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনে তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।” তিনি অভিযোগ করেন, এর প্রতিক্রিয়ায় ভারত বাংলাদেশি কিছু গণমাধ্যমের সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “আমরা ভারতের মতো প্রতিশোধপরায়ণ হতে চাই না। কিন্তু তারা আমাদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নানা ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।”

ভারতীয় মিডিয়াকে তীব্র সমালোচনা

ভারতীয় গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়েও তীব্র সমালোচনা করেন শফিকুল আলম। তার ভাষ্য, “ভারতের মিডিয়াগুলো সংবেদনশীল ইস্যুগুলো নিয়ে নাটকীয় উচ্চারণ করে বিনোদনের চেষ্টা করে। অথচ আমাদের দেশে সাংবাদিকতা অনেক বেশি দায়িত্বশীল এবং জনমুখী।”

তিনি ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বাংলাদেশি কিছু টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার ভারতে বন্ধ হওয়া নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেন। বলেন, “যেসব চ্যানেল বন্ধ করা হয়েছে, তারা ভালো মানের সংবাদ পরিবেশন করত। এটা খুবই দুঃখজনক।”

প্রেস ব্রিফিংয়ের আগেই উত্তেজনা

শনিবার সন্ধ্যায়, প্রেস ব্রিফিংয়ের অনেক আগেই বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মী প্রেস সেন্টারে উপস্থিত হতে শুরু করেন। সন্ধ্যা ৭টার মধ্যেই আসন কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
সবার ধারণা ছিল, প্রেস ব্রিফিং আর কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হবে। তবে পরে উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, উপস্থিতদের মধ্যে যেন কেবলমাত্র গণমাধ্যমকর্মীরাই থাকেন, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

এক পর্যায়ে তিনি জানান, “মিটিং শুরু হয়েছে”—এই বক্তব্য দেওয়ার পরেই আবার বলেন, “আমি কিছু জানি না।” এরপর তিনি সবাইকে অপেক্ষা করতে বলেন এবং আবার ভেতরে চলে যান।
সাংবাদিকরা তখন সংশয়ে পড়ে যান—আসলে মিটিং শুরু হয়েছে কি না, কবে ব্রিফিং শুরু হবে—এসব প্রশ্নের উত্তর মিলছিল না। তবে ব্রিফিংয়ের অপেক্ষায় তারা অবস্থান ধরে রাখেন।


 

এই রিপোর্টে একদিকে যেমন সরকারের জরুরি সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রেক্ষাপট উঠে এসেছে, অন্যদিকে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ও মিডিয়ার স্বাধীনতা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এর সঙ্গে সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগের তদন্ত ও তার পেছনের রাজনীতিও স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে।

কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি


News Card Generator