উপদেষ্টা আসিফের ব্যাগে ম্যাগজিন, জাস্ট একটা ভুল, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানালেন, উপদেষ্টা আসিফের ব্যাগে একে-৪৭ নয়, ছিল খালি ম্যাগাজিন—যা ‘একটি সাধারণ ভুল’। তবে উঠছে প্রশ্ন নিরাপত্তা ও অস্ত্র লাইসেন্স নিয়ে।..

বিমানবন্দরে উচ্চপর্যায়ের নিরাপত্তা ভেদ করে একজন সরকারি উপদেষ্টার ব্যাগ থেকে অস্ত্রের অংশ (ম্যাগাজিন) উদ্ধারের ঘটনায় দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। এই ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আজ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, এটি কোনো গুলিভর্তি ম্যাগাজিন বা ভয়ংকর অস্ত্র নয়—বরং একটি খালি পিস্তলের ম্যাগাজিন, যা ‘স্রেফ একটি ভুলে’ ব্যাগে রয়ে গিয়েছিল।

আজ সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “অনেকে বলছেন, এটা একে-৪৭ এর ম্যাগাজিন। না, এটি একে-৪৭ নয়। এটি উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের একটি পিস্তলের খালি ম্যাগাজিন ছিল। সেটি ভুলে রয়ে গিয়েছিল। এটি নিছক একটি ভুল, এতে ভয়ের কিছু নেই।”

তিনি আরও বলেন, “অনেক সময় এমন হয়, আপনি হয়তো চশমা নিতে চান, কিন্তু ভুল করে মোবাইল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। এই ঘটনাটাও সেরকমই—উনি যদি জানতেন, তাহলে নিশ্চয়ই এটি নিয়ে যেতেন না।”

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বয়স এখনো ৩০ হয়নি। অথচ দেশে বৈধ অস্ত্রের লাইসেন্স পেতে হলে ন্যূনতম ৩০ বছর বয়স বাধ্যতামূলক। তাহলে তিনি কীভাবে এ লাইসেন্স পেলেন?

সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, “আমি যেহেতু অস্ত্র লাইসেন্স সংক্রান্ত আইনটি দেখিনি, তাই এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু বলতে পারছি না।”

এই উত্তরের পরই সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে আবারও প্রশ্ন উঠেছে—আইনের যে শর্ত মেনে একজন সাধারণ নাগরিককে লাইসেন্সের জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়, সেটি কি সরকারি পদে থাকা ব্যক্তিদের জন্য আলাদা?

বিমানবন্দরের মতো সংবেদনশীল জায়গায় একের পর এক তিন দফা স্ক্যানিং হয়—তবুও তাৎক্ষণিকভাবে ধরা পড়েনি এই ম্যাগাজিন!
তৃতীয় স্ক্যানিংয়ে গিয়ে বিষয়টি ধরা পড়ে। এ নিয়েও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়।

তিনি বলেন, “আমার ভাই যদি একজন নেতা হন, তিনি হয়তো কিছুটা প্রিভিলেজ পান। কিন্তু এই ধরনের প্রিভিলেজ যেন আর না থাকে, সবাই যেন আইন অনুযায়ী সমান আচরণ পান—এই ব্যাপারে কড়া নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বক্তব্যে এটা পরোক্ষভাবে স্বীকার করে নেয়া হলো যে, সাধারণ নাগরিক আর প্রভাবশালীদের জন্য এক ধরনের দ্বৈত নীতি এখনও বিদ্যমান, যা দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে।

উল্লেখ্য, এদিন অনুষ্ঠিত সভায় ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশব্যাপী নানা সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “এই সময়কালে পুরো বাংলাদেশে নানা অনুষ্ঠান হবে। কোথাও কোনো হুমকি এখনো নেই, তবে সব আয়োজন নির্বিঘ্ন করতে আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছি।”

তিনি নিশ্চিত করেন, গোয়েন্দা সংস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবসময় সতর্ক থাকবে এবং দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে যা যা প্রয়োজন, তা করা হবে।

No se encontraron comentarios


News Card Generator