close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

তুরস্কের বিরুদ্ধে ভারতের গর্জন! পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়ানোর শাস্তি চায় 'স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ'..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
পাকিস্তানকে ড্রোন দিয়ে সহায়তা করায় তুরস্কের বিরুদ্ধে চরম ক্ষোভ ভারতজুড়ে। অর্থনৈতিক অবরোধ, পর্যটন নিষেধাজ্ঞা থেকে শুরু করে বয়কটের দাবি উঠেছে। ঘূর্ণায়মান হচ্ছে এক নতুন কূটনৈতিক সংঘাত।..

তুরস্ককে শাস্তি দিতে জোর দাবি ভারতজুড়ে: পাকিস্তানকে সমর্থনের জবাবে কঠোর বার্তা 'স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ'-এর

ভারত ও পাকিস্তান সাম্প্রতিক সংঘাতের পর যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেও, এই সময়কালে তুরস্কের খোলাখুলি পাকিস্তানপ্রীতি নিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে তৈরি হয়েছে প্রবল উত্তেজনা ও ক্ষোভ। বিশেষত, চার দিনের সংঘর্ষ চলাকালীন পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে যে দেশের ড্রোন ও সামরিক প্রযুক্তি ভারতের ঘাঁটিগুলোতে হানা দিতে সাহায্য করেছে, সেই তুরস্ককে শাস্তি দেওয়ার দাবি তুলেছে ভারতের এক প্রভাবশালী সংগঠন স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ

এই সংগঠন সরাসরি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তুরস্কের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের দাবি জানিয়েছে। তুরস্ক থেকে আসা সামগ্রী বয়কট করা, সেই দেশের সঙ্গে বিমান চলাচল বন্ধ রাখা এবং ভারতীয় পর্যটকদের তুরস্কে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। সংগঠনের আহ্বায়ক অশ্বিনী মহাজন বলেন, “চীনের পর তুরস্কই এখন পাকিস্তানের দ্বিতীয় বড় অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ। তাদের পাঠানো প্রযুক্তি ও অস্ত্রের মাধ্যমেই পাকিস্তানের নৌ ও বিমান বাহিনী আরও সক্ষম হয়ে উঠছে। এটা শুধু বাণিজ্যিক সম্পর্ক নয়, বরং আদর্শগত মিত্রতা।”

তুরস্ক-পাকিস্তান জোটে উদ্বেগ বাড়ছে দক্ষিণ এশিয়ায়

স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের মতে, তুরস্ক ও পাকিস্তানের এই প্রতিরক্ষা সহযোগিতা শুধু অস্ত্র বাণিজ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং এটি একটি সুপরিকল্পিত কৌশল, যার মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত স্থিতাবস্থা নষ্ট করার চেষ্টা চলছে। তারা দাবি করে, তুরস্ক পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে প্রণোদনা দিচ্ছে, ভারতের বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালীভাবে আঘাত হানার জন্য।

পর্যটন ও আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার ডাক

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত তিন অর্থবছরে গড়ে বছরে প্রায় দুই লক্ষ ভারতীয় পর্যটক তুরস্ক ভ্রমণ করেছেন। এই সংখ্যা রীতিমতো উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বয়কটপন্থীদের কাছে। তাই সংগঠনটি দেশের নাগরিকদের তুরস্কে ভ্রমণ না করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলছে, যেহেতু এই পর্যটনের মাধ্যমে তুরস্ক বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করে, তাই এটি বন্ধ হলে চাপ বাড়বে তাদের ওপর।

ভারতীয় ব্যবসায়ী ও বিনোদন জগতেও প্রতিক্রিয়া

তুরস্কের বিরুদ্ধে এই মনোভাব কেবল রাজনৈতিক নয়, বরং এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়ছে ব্যবসা ও বিনোদন খাতেও। রাজস্থানের মার্বেল ব্যবসায়ী ও পুণের আপেল আমদানিকারকরা ইতোমধ্যেই তুরস্ক থেকে আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন। পাশাপাশি, ভারতের বিভিন্ন ভ্রমণ সংস্থা তুরস্কগামী ট্যুর প্যাকেজ বাতিল করেছে।

এছাড়াও, পশ্চিম ভারতের চলচ্চিত্র নির্মাতারা তুরস্কে শুটিং বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেছেন, এমন দেশের মাটিতে শিল্পকর্ম তৈরি করা অনৈতিক, যারা ভারতের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অবস্থান নেয়।

অর্থনৈতিক অবরোধ কি বাস্তবসম্মত?

তবে বিশ্লেষকদের একাংশ বলছে, বাস্তবে তুরস্ক থেকে আমদানির তুলনায় ভারত থেকে রপ্তানির পরিমাণ বেশি। ফলে পুরোপুরি অবরোধ কার্যকর হলে ভারতীয় রপ্তানিকারকরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। তবে বয়কট ও রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে যদি তুরস্কের অবস্থান নরম করা যায়, সেটিও কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে দেখা হবে।


কূটনৈতিক উত্তেজনার সূচনা?

তুরস্কের পক্ষপাতদুষ্ট অবস্থান ও ভারতের অভ্যন্তরে জাগ্রত প্রতিবাদ এক নতুন কূটনৈতিক দ্বন্দ্বের সম্ভাবনা তৈরি করেছে। এখন দেখার বিষয়, ভারত সরকার কি আসলেই এই দাবিগুলো বিবেচনায় নেয় এবং কোনো কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করে, নাকি বিষয়টিকে সময়ের স্রোতে ঠেলে দেয়। তবে স্পষ্টতই, তুরস্কের এই অবস্থানের জবাব চাইছে ভারতের অনেক অংশ, বিশেষত দেশপ্রেমিক গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলো।

Ingen kommentarer fundet


News Card Generator