close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ট্রা ম্প কেবল ই রা নে র সঙ্গেই বিশ্বাসঘাতকতা করেননি, নিজ জাতিকেও প্র তা রি ত করেছেন..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন হামলার কড়া জবাবের হুঁশিয়ারি দিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ট্রাম্পকে ‘জাতির বিশ্বাসঘাতক’ আখ্যা দিয়ে ইরান বলছে, কেবল সামরিক নয়—সব পথে পাল্টা জবাব আসবেই।..

যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলার জেরে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এরই মধ্যে রোববার (২২ জুন) এক জোরালো সংবাদ সম্মেলনে ইরানের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক আব্বাস আরাঘচি বিস্ফোরক ভাষায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তীব্র অভিযোগ তোলেন।

তিনি সাফ জানিয়ে দেন, “ট্রাম্প কেবল ইরানের সঙ্গেই বিশ্বাসঘাতকতা করেননি, তিনি নিজের জাতিকেও প্রতারিত করেছেন।” তাঁর ভাষায়, এই হামলা কেবল ইরান নয়, গোটা বিশ্ব শান্তি প্রক্রিয়ার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের উদাসীনতা ও আগ্রাসী মনোভাবের প্রমাণ।

আরাঘচি বলেন, “আমরা আমেরিকানদের আগ্রাসনের মুখোমুখি হয়েছি। এটি আন্তর্জাতিক আইন এবং নিরাপত্তা পরিষদের রেজোলিউশন ২২৩১ এর সরাসরি লঙ্ঘন।” তিনি আরও বলেন, “আমরা এই আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানাই এবং এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে কথা বলব।”

সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দিকেও সরাসরি আঙুল তোলেন ইরানি এই কূটনীতিক। আরাঘচি অভিযোগ করেন, “ট্রাম্প একজন অপরাধীর দাবির কাছে নতি স্বীকার করেছেন।” ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট—ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও তার মিত্রদের দিকেই।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক ভাষা বোঝে না, কেবল শক্তি এবং হুমকির ভাষায় কথা বলে। তারা আন্তর্জাতিক সনদ ও আইনের প্রতি কোনো শ্রদ্ধা দেখায় না।

ইহুদিবাদী সরকারের ‘ব্যর্থতা’র কথা তুলে ধরেন তিনি।
আরাঘচি দাবি করেন, “গত রাতের হামলা দেখিয়েছে ইহুদিবাদী সরকার ইরানে আক্রমণের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। এখন তারা সমস্যায় পড়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র তাদেরকে বাঁচাতে মরিয়া।”

সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার ক্ষতি যতই কম হোক না কেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্যই ভয়াবহ। “আমরা এটিকে উপেক্ষা করতে পারি না,” তিনি বলেন।

আলোচনার প্রসঙ্গে তিনি জানান, আলোচনার দরজা সবসময় খোলা থাকা উচিত। কিন্তু এখন সেটা সম্ভব নয়। কারণ আমার দেশের ওপর সরাসরি সামরিক আগ্রাসন চালানো হয়েছে। এর জবাব দিতে হবে।

এই প্রশ্নের জবাবে আরাঘচি স্পষ্ট করে কিছু জানাননি। তবে তিনি বলেন, “আমাদের সামনে একাধিক বিকল্প পথ খোলা রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা কখনোই ইরানের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা বা জনগণের নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করব না।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান তার ভূমি রক্ষায় প্রতিটি সম্ভাব্য পথ অনুসরণ করবে—সামরিক, কূটনৈতিক বা অন্য কোনো কৌশলগত ব্যবস্থা—সবকিছুই বিবেচনায় রয়েছে।

বিশ্বরাজনীতির বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই ঘটনার তাৎপর্য অনেক। একদিকে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসী ভূমিকায় মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে অস্থিরতা বাড়ছে, অন্যদিকে ইরানও আর পেছনে হটছে না। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কণ্ঠে যেভাবে সরাসরি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট এবং ইসরায়েলি নেতৃত্বকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, তা আগামী দিনে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক পরিবেশে চরম উত্তেজনা তৈরি করবে।

এই অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সম্পর্ক কোন দিকে গড়ায়, এবং কতটা বিস্তৃত হয় এই সংঘাত, তার ওপর নির্ভর করবে ভবিষ্যতের নিরাপত্তা এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের বড় একটা অংশ।

Комментариев нет