২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ শুরু হয়েছে। বিশেষ করে ইসলামি দলগুলোর ভোট 'এক বাক্সে' আনার লক্ষ্যে গঠিত ৮ দলীয় জোটের মধ্যে আসন সমঝোতা নিয়ে চলছে ব্যাপক দরকষাকষি। সারা দেশে ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে জামায়াতে ইসলামী আগেভাগেই মাঠে নামলেও এখন শরিক দলগুলোর পক্ষ থেকে ২২০টি আসনের দাবি তোলা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জামায়াত কতটি আসনে শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্র মতে, ৫ দফার আন্দোলন নিয়ে মাঠে নামার আগেই জামায়াত নিজেদের একক শক্তিতে ৩০০ আসনে প্রস্তুতি নিয়েছিল। কিন্তু ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর আমির ডা. শফিকুর রহমানের উদ্যোগে সমমনা দলগুলোকে এক ছাতার নিচে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়। বর্তমানে এই জোটে ৮টি দল থাকলেও আরও ২-৩টি দল যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শরিকদের মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ১২০টি, খেলাফত মজলিস ৩০টি এবং খেলাফত আন্দোলন ২০টি আসন দাবি করেছে। এছাড়াও নেজামে ইসলাম পার্টি, জাগপা ও বিডিপি কমপক্ষে ১০টি করে আসন চেয়েছে। সব মিলিয়ে শরিকদের চাহিদাই ২২০ আসন ছাড়িয়ে গেছে।
এই বিশাল দাবির মুখে জামায়াতের অবস্থান সম্পর্কে দলটির প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব যোবায়ের জানিয়েছেন, সমঝোতা এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। তিনি স্পষ্ট করেছেন যে, সংখ্যার ভিত্তিতে নয় বরং 'বিজয় নিশ্চিত করার সক্ষমতা'র ভিত্তিতেই প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। অর্থাৎ, যে দলের প্রার্থী সংশ্লিষ্ট আসনে জেতার ক্ষমতা রাখেন, তাকেই জোটের একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হবে। ইসলামপন্থি ভোট যেন কোনোভাবেই ভাগ না হয়, সেটিই তাদের প্রধান লক্ষ্য।
লিয়াজোঁ কমিটির মাধ্যমে আগামী দু-একদিনের মধ্যেই এই তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছে। ৮ দলের শীর্ষ নেতাদের বিজয় নিশ্চিত করা এবং সরকার গঠনের মতো প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসনে জয়ী হয়ে আসাটাই এই জোটের মূল রণকৌশল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জামায়াত যদি বৃহত্তর স্বার্থে বড় ধরনের ছাড় দেয়, তবে দেশের সংসদীয় রাজনীতিতে ইসলামি দলগুলোর একটি শক্তিশালী ব্লক তৈরি হতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত জামায়াত নিজেদের জন্য কতটি আসন রাখে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।



















