যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মির্জা গালিব মন্তব্য করেছেন যে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বের দুর্বলতাকে কাজে লাগাতে চাইছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জামায়াত জনমত তৈরির চেষ্টা করছে, যা রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে বৈধ হলেও বৃহত্তর গণতান্ত্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রশ্নবিদ্ধ।
মঙ্গলবার দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশনের আলোচনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেন। ড. মির্জা গালিবের মতে, একটি জন-অভ্যুত্থানের পর তারেক রহমানের দেশে ফিরে এসে নেতৃত্ব গ্রহণের প্রত্যাশা ছিল, কিন্তু একটি চরম সংকটময় মুহূর্তেও তিনি দেশে না ফেরায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তিনি মনে করেন, জামায়াত নেতাদের সাম্প্রতিক মন্তব্যগুলো জনমনের সেই প্রশ্নগুলোর সঙ্গেই সম্পর্কিত।
বিশেষ করে, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির এটিএম আজহারুল ইসলামের বক্তব্যটি এখানে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আজহারুল ইসলাম বলেছিলেন যে, যারা ১৮ কোটি মানুষকে দেশে ফেলে রেখে বিদেশে অবস্থান করেন, তারা দেশপ্রেমিক নন। এর বিপরীতে জামায়াত নেতারা দেশত্যাগ না করে বিদেশ থেকে এসেও ফাঁসির মঞ্চে আরোহণ করেছেন এবং অনেক নেতা বিদেশ থেকে দেশে আসার সাহস পাচ্ছেন না। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ইংল্যান্ডের নাগরিকত্ব ছেড়ে এসে যদি প্রধানমন্ত্রী হতে না পারেন, তাহলে দুই কূলই হারানোর আশঙ্কা রয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মির্জা গালিব এই প্রসঙ্গে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বকে আলাদাভাবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য সব রাজনৈতিক দল এবং তাদের নেতাকর্মীদের কাছে খালেদা জিয়া সম্মানের জায়গায় রয়েছেন। গণতান্ত্রিক সংগ্রামের আইকন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পাশাপাশি ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধেও তাঁর বলিষ্ঠ অবস্থান ছিল।
ড. মির্জা গালিব তারেক রহমানের দেশে না ফেরার সমালোচনাকে মূলত তিনটি দিক থেকে আলোচনা করার কথা বলেন। প্রথমত, এটি তার একান্ত ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত এবং এ বিষয়ে অন্য কারো মন্তব্য করা সমীচীন নয়। দ্বিতীয়ত, এটি দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়; ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে যত দ্রুত দেশে এসে তিনি নেতৃত্ব দেবেন, দলের জন্য ততই মঙ্গল। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তৃতীয় বিষয়টি হলো স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের সঙ্গে এর সম্পর্ক। তিনি প্রশ্ন তোলেন, তারেক রহমান যদি বলেন দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত তার নিজের হাতে নেই, তবে এটি দেশের নিরাপত্তা ইস্যুর সঙ্গে জড়িত কিনা। একজন সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে তাঁর এই না আসা একটি বৈধ জনমনে প্রশ্ন তৈরি করে।



















