তারেক রহমান দেশে ফিরলে নিরাপত্তায় সরকারের সর্বোচ্চ সহায়তা—অধ্যাপক আসিফ নজরুলের গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানিয়েছেন—তারেক রহমানের দেশে ফেরার পথে কোনো আইনগত বাধা নেই এবং সরকার তাকে নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ সহায়তা দিতে প্রস্তুত। এই বক্তব্য ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আ..

জাতীয় রাজনীতিতে ফের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দীর্ঘ সময় বিদেশে অবস্থান করা এই রাজনীতিককে ঘিরে তাঁর দেশে ফেরা নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনার মধ্যেই সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে জানাল সহযোগিতার বার্তা। সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তারেক রহমানের দেশে ফেরার সম্ভাবনা ও সরকারি অবস্থান সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেন। তাঁর মন্তব্যে স্পষ্টভাবে উঠে আসে—সরকার চাইলে বিরোধী দলের অন্যতম শীর্ষ নেতার দেশে ফেরা নিয়ে কোনো বাধা সৃষ্টি করতে চায় না, বরং প্রয়োজনীয় সহায়তাও করতে প্রস্তুত।

ড. আসিফ নজরুল বলেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরায় সরকারের দিক থেকে আইনগত কোনো বাধা নেই। যদি কোনো প্রক্রিয়াগত জটিলতা বা বিধিনিষেধ থেকেও থাকে, সরকার সেই বিষয়েও সর্বোচ্চ সহায়তার চেষ্টা করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তাঁর ভাষায়, “তারেক রহমান দেশে ফিরলে আমরা তাঁকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে বদ্ধপরিকর। একজন নাগরিক হিসেবে তিনি সব ধরনের নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার রাখেন, এবং সরকার সে দায়িত্ব পালন করবে।”

আইন উপদেষ্টা আরও জানান, দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত পুরোপুরি তারেক রহমানের ব্যক্তিগত বিষয়। এ বিষয়ে কখন তিনি মনে করবেন যে সময় উপযুক্ত—সেই সিদ্ধান্ত শুধু তিনিই নিতে পারবেন। তিনি বলেন, “তিনি একজন পরিপক্ব ও প্রজ্ঞাবান রাজনীতিবিদ। দেশে ফেরার সঠিক সময় তিনি নিজেই সবচেয়ে ভালো বোঝেন। আমরা বা বাইরের কেউ তাঁকে এ বিষয়ে চাপ দিতে পারি না।”

সাম্প্রতিক সময়ে রাজনীতির মাঠে একাধিক মহল থেকে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে—কেন তারেক রহমান দেশে ফিরে সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত হচ্ছেন না? এ বিষয়ে কিছু রাজনৈতিক মহল, এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নানা মন্তব্য দেখা গেছে। তবে এসব সমালোচনার কড়া জবাব দেন অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, এসব প্রশ্ন বা মন্তব্য তাঁর কাছে “অরুচিকর ও অযৌক্তিক” মনে হয়। কারণ ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সিদ্ধান্ত নিয়ে অযথা বক্তব্য দেওয়া ঠিক নয়।

তিনি আরও বলেন, “আমরা অনেকেই মন্তব্য করি—তিনি কেন আসছেন না? কখন আসবেন? এসব প্রশ্ন করা শোভন নয়। এটা মা-ছেলের বিষয়; ব্যক্তিগত পরিস্থিতি, পারিবারিক সিদ্ধান্ত, রাজনৈতিক কৌশল—সব মিলিয়েই বিষয়টি নির্ভর করে। এ নিয়ে প্রি-জাজ করা বা অগ্রিম মন্তব্য করা অত্যন্ত অরুচিকর।”

তিনি উল্লেখ করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, রাজনৈতিক পরিস্থিতি—এসব অনেক কিছুই সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলতে পারে। তাই বাইরে থেকে অনুমান করার চেয়ে বিষয়টি ব্যক্তিগত সম্মান ও রাজনৈতিক শালীনতার জায়গা থেকে বিবেচনা করা উচিত।

এই বক্তব্যের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। বিরোধী দলের রাজনীতি, সরকার-বিরোধী আন্দোলন, ভবিষ্যৎ নির্বাচনের সমীকরণসহ বিভিন্ন বিষয়ে তারেক রহমানের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। ফলে তাঁর দেশে ফেরা কি নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি করবে—তা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে রাজনীতির অন্দরমহলে।

একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে—সরকার যখন প্রকাশ্যে নিরাপত্তা ও সহযোগিতার আশ্বাস দিল, তাহলে কি তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফেরা নিয়ে নতুন করে চিন্তা করছেন? নাকি এখনো সময় আসেনি বলে মনে করছেন? যদিও এ বিষয়ে আইন উপদেষ্টা স্পষ্ট করেছেন—এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত। সঠিক সময় এলে তিনিই জানাবেন।

সব মিলিয়ে, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের বক্তব্য রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ দীর্ঘদিন পর সরকারিভাবে বিরোধী দলের শীর্ষ নেতার দেশে ফেরা নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্য আসল। এখন নজর রাজনৈতিক অঙ্গনে—তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত কী হবে? তিনি কি দেশে ফিরবেন? নাকি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আরও সময় নেবেন?

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে বড় প্রভাব ফেলবে—এতে কোনো সন্দেহ নেই।

কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি


News Card Generator