টানা ৩৭ ঘণ্টা উড়ে ইরানে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ বোমারু বিমান..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
৩৭ ঘণ্টা টানা উড়ে ইরানের ৩ পারমাণবিক স্থাপনায় ধ্বংসাত্মক হামলা চালালো যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ বোমারু বিমান। বাংকারবিধ্বংসী বোমা, সাবমেরিন ক্ষেপণাস্ত্র—যুদ্ধের মুখোমুখি বিশ্ব!..

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ইতিহাসে এক নজিরবিহীন অভিযান চালানো হয়েছে। মিজৌরি ঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করে বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান টানা ৩৭ ঘণ্টা উড়ে গিয়ে ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় বিধ্বংসী হামলা চালিয়েছে। এমন ঝড়ো অভিযানে পুরো মধ্যপ্রাচ্য যেন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এই অভিযানে অংশ নেওয়া বি-২ বোমারু বিমানগুলো আকাশেই একাধিকবার জ্বালানি নিয়েছে। তাদের লক্ষ্য ছিল—ইরানের গভীরতম, ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনাগুলো। মার্কিন বিমানবাহিনীর এই বোমারু বহর ছিল সম্পূর্ণ অস্ত্র সজ্জিত।

হামলার লক্ষ্য ছিল ইরানের—ফর্দো, নাতাঞ্জ এবং ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনা। এগুলো ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রমের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।

এই অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র প্রথমবারের মতো যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করেছে জিবিইউ-৫৭ (GBU-57) বাংকারবিধ্বংসী বোমা, যার প্রতিটির ওজন ৩০ হাজার পাউন্ড। মার্কিন কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, ছয়টি বি-২ বিমান ফর্দো স্থাপনায় অন্তত এক ডজন এই বোমা ফেলেছে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর সাবমেরিন থেকে ৩০টি টিএলএএম ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে ইরানের নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান স্থাপনাগুলোর দিকে। এ ছাড়া একটি বি-২ বোমারু বিমান নাতাঞ্জে আরও দুটি বাংকারবিধ্বংসী বোমা নিক্ষেপ করে।

হোয়াইট হাউসে দেওয়া জাতির উদ্দেশে ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথ থেকে ফিরিয়ে আনতেই এই হামলা। আমরা ওদের সক্ষমতা চূড়ান্তভাবে ধ্বংস করেছি।

তেহরানও হামলার সত্যতা স্বীকার করেছে। তবে ইরান দাবি করেছে, যেসব স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে, সেগুলো আগেই খালি করে ফেলা হয়েছিল। ফলে কোনো পারমাণবিক উপাদান ছিল না এবং জনগণের জন্য কোনো বিকিরণ বা মারাত্মক ক্ষতির ঝুঁকি তৈরি হয়নি।

তেহরানের এক কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যা করেছে, তা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আমরা পাল্টা প্রতিক্রিয়ার অধিকার রাখি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে অস্থিরতা ছড়িয়ে দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সামরিক জড়িত হওয়া পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে। আন্তর্জাতিক মহল এখন চোখ রেখেছে ইরানের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।

ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে—কূটনৈতিক পথ ব্যর্থ হলে যুক্তরাষ্ট্র কোনোভাবেই ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে চলতে দেবে না।

৩৭ ঘণ্টার এই ভয়ঙ্কর অভিযান কেবল যুদ্ধ নয়, এটা বিশ্বশক্তির শক্তিপ্রদর্শনের এক দৃষ্টান্ত। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়ে দিল—যুদ্ধ বাধলে তারা প্রস্তুত, আর পারমাণবিক হুমকি থাকলে তারা থেমে থাকবে না।

এই হামলা কি নতুন এক যুদ্ধের সূচনা? না কি শেষবারের মতো কূটনীতি ফিরে আসবে? বিশ্ববাসী এখন সেই উত্তরের অপেক্ষায়।

कोई टिप्पणी नहीं मिली


News Card Generator