আইন সংশোধনের ৬ গুরুত্বপূর্ণ দিক
সভায় নারী মৈত্রীর প্রকল্প সমন্বয়ক নাসরিন আক্তার তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের ৬টি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেন:
পাবলিক প্লেসে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্তকরণ
তামাক পণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধকরণ
খুচরা শলাকা, মোড়কবিহীন এবং খোলা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধকরণ
তামাক কোম্পানির কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (CSR) কার্যক্রমে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা
সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০% থেকে ৯০% বৃদ্ধি
ই-সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে তরুণদের রক্ষায় কঠোর আইন প্রয়োগ
ভ্রান্ত প্রচারণার বিরুদ্ধে বাস্তবতা
বক্তারা বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো মিথ্যা প্রচার করছে যে আইন সংশোধন হলে সরকারের রাজস্ব কমে যাবে। তবে পরিসংখ্যান বলছে, ২০০৫ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন ও ২০১৩ সালের সংশোধনের পর গত ১৮ বছরে তামাক থেকে রাজস্ব আয় ১২.৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, আর তামাক ব্যবহার ১৮% হ্রাস পেয়েছে।
তামাক ব্যবসার সঙ্গে ১৫ লাখ খুচরা বিক্রেতা জড়িত বলে দাবি করা হলেও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০২১ সালের তথ্যমতে, খাদ্য, পানীয় ও তামাকপণ্য বিক্রি করা দোকানের সংখ্যা মাত্র ১ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪১টি। এসব দোকানে তামাকের পাশাপাশি অন্যান্য পণ্যও বিক্রি হয়, তাই আইন বাস্তবায়নে তাদের কর্মসংস্থানের বড় কোনো প্রভাব পড়বে না।
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি
সভায় উপস্থিত অতিরিক্ত সচিব শেখ মোমেনা মনি জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক্সিকিউটিভ কমিটির পরবর্তী সভায় আলোচনাগুলো উপস্থাপন করা হবে এবং সংশোধনী দ্রুত বাস্তবায়নের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
তামাকবিরোধী তরুণ ফোরামের আহ্বায়ক আশরাফিয়া জান্নাত বলেন, "প্রতিদিন তামাকজনিত কারণে ৪৪২ জন মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে, অথচ আমাদের সমাজ এখনো নীরব। আমাদের সুস্থভাবে বাঁচার অধিকার রয়েছে। সংশোধনী দ্রুত বাস্তবায়ন করে আমাদের একটি স্বাস্থ্যকর সমাজ উপহার দিন।"
সভায় তামাকবিরোধী মায়েদের ফোরাম, শিক্ষক ফোরাম, গার্লস গাইড রেঞ্জার এবং রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরাও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত পাসের দাবিতে একাত্মতা জানান। বক্তারা আশা প্রকাশ করেন, সরকার জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সংশোধনী দ্রুত পাস করবে।