সুন্দরগঞ্জে তিস্তা সংযোগ সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

Sudipto Shamim avatar   
Sudipto Shamim
এলাকাবাসীর মানববন্ধন, প্রকৌশলীর অপসারণ দাবি

গাইবান্ধা প্রতিনিধি:

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে সৌদি সরকারের অর্থায়নে এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন তিস্তা ব্রিজ সংযোগ সড়ক ধর্মপুর-লক্ষ্মীপুর ভায়া মণ্ডলেরহাট রাস্তার নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মানববন্ধন করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

জানা যায়, উপজেলার ছাপরহাটী ইউনিয়নের ম্যাছেরঘাট ব্রিজ থেকে আখড়া মন্দির হয়ে ছাপরহাটী এসসি উচ্চ বিদ্যালয়ের সীমানা ঘেঁষে সোজা সড়ক নির্মাণের লক্ষ্যে কয়েকজন জমির মালিকের জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এই জমিগুলোর মধ্যে ছিল হরিবালা শীলের ছেলে অখিন শীল, বিমল মোদকের ছেলে সুশান্ত কুমার মোদক, মঙ্গলু রাম মোদকের ছেলে রুহিনী কান্ত মোদক এবং ভুবন চন্দ্র মোদকের ছেলে অরবিন্দু রায় দীপুর জমি।

অভিযোগ রয়েছে, এলজিইডির নকশা অনুযায়ী সোজা সড়ক নির্মাণের কথা থাকলেও ছাপরহাটী এসসি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আহাদ বকুলের প্রভাব ও যোগসাজশে নকশা থেকে বিচ্যুতি ঘটিয়ে রাস্তা একে-বেঁকে নির্মাণের চেষ্টা চলছে। এতে অধিগ্রহণকৃত জমির কিছু অংশ ব্যবহার না করে সুশান্ত কুমার মোদক ও অরবিন্দু রায় দীপুর জমি ব্যবহার করা হচ্ছে।

স্থানীয় সচেতন মহল ও ক্ষতিগ্রস্তরা বারবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নকশা অনুযায়ী কাজ বাস্তবায়নের অনুরোধ জানালেও কর্তৃপক্ষ তা উপেক্ষা করে নির্মাণকাজ অব্যাহত রাখে। বাধা দেওয়ায় প্রধান শিক্ষক আব্দুল আহাদ বকুল পূর্ব শত্রুতার জেরে উপজেলা প্রকৌশলী সিদ্দিকুর রহমানকে প্রভাবিত করে আলী হায়দার, আনিছুর রহমান, কামরুল ইসলাম এবং ব্যবসায়ী দীপু বাবুর বিরুদ্ধে সেনা ক্যাম্পে চাঁদাবাজির মিথ্যা অভিযোগ করেন।

এই ঘটনার প্রতিবাদে গত রোববার রাত ৮টার দিকে মণ্ডলের হাট এলাকায় এলাকাবাসী মানববন্ধনের আয়োজন করেন। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় আলী হায়দার, আনিছুর রহমান, মাওলানা মকবুল হোসেন, মোহাম্মদ আলী, কামরুল ইসলাম ও দীপু বাবু।

বক্তারা বলেন, ‘তিস্তা সংযোগ সড়ক নির্মাণে যে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতি চলছে, তা দীর্ঘদিন ধরে আমরা দেখে আসছি। আমরা উন্নয়নের বিরোধিতা করি না; চাই নিয়মতান্ত্রিক ও স্বচ্ছ উন্নয়ন। অথচ আমাদের বারবার অভিযোগ উপেক্ষা করা হয়েছে। উপরন্তু অনিয়মের প্রতিবাদ করায় আমাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এটি অত্যন্ত নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য।’

তারা আরও বলেন, ‘এই অপচেষ্টা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা সরকারের ন্যায্য উন্নয়ন চাই, যেখানে সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষা পাবে। কিন্তু দুর্নীতিপরায়ণ একটি মহল ক্ষমতার অপব্যবহার করে মানুষকে হয়রানি করছে।’

বক্তারা অবিলম্বে এসব মিথ্যা অভিযোগ প্রত্যাহার, অধিগ্রহণকৃত জমির ভিত্তিতে মূল নকশা অনুসারে সড়ক নির্মাণ, অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যর্থ ও পক্ষপাতদুষ্ট উপজেলা প্রকৌশলী সিদ্দিকুর রহমানের অপসারণ দাবি করেন। বক্তারা হুঁশিয়ার করে বলেন, দাবি না মানা হলে এলাকাবাসী আরও বৃহত্তর কর্মসূচির ডাক দিতে বাধ্য হবে।

Nenhum comentário encontrado