close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

স্ত্রীর হাতে চড় খেয়েছেন ম্যাক্রোঁ?

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ভিয়েতনামে পৌঁছেই স্ত্রীর হাতে ধাক্কা খেলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ! ভিডিও ভাইরাল হতেই গুঞ্জন—বিমানের দরজায় ঝগড়া? চড়? শেষমেশ মুখ খুললেন ম্যাক্রোঁ নিজেই, জানালেন এর নেপথ্য গল্প।..

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সফরে গিয়ে হঠাৎই আলোচনার কেন্দ্রে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও তার স্ত্রী ব্রিজিট ম্যাক্রোঁ। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে একটি ভিডিও, যেখানে দেখা যাচ্ছে—ভিয়েতনামে বিমান থেকে নামার সময় ম্যাক্রোঁর মুখের দিকে হাত বাড়িয়ে তাকে ধাক্কা দিচ্ছেন স্ত্রী ব্রিজিট। কেউ বলছে এটি ‘চড়’, কেউ বলছে ‘ঝগড়া’। তবে বাস্তবতা অন্যরকম বলেই দাবি করেছেন খোদ প্রেসিডেন্ট।

কী ঘটেছিল সেই মুহূর্তে?

রোববার, ২৫ মে—ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে অবতরণ করে ফরাসি রাষ্ট্রীয় বিমান। বিমানের দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে ভিডিও ধারণ করেন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)। ভিডিওতে দেখা যায়, ইউনিফর্ম পরা একজন বিমান কর্মী দরজা খুলছেন, ভিতরে তখন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ দাঁড়িয়ে আছেন ও কারও সঙ্গে কথা বলছেন। হঠাৎ করেই একটি লাল জ্যাকেট পরা হাত আসে ক্যামেরার ফ্রেমে। একটি হাত ম্যাক্রোঁর চোয়ালে, অন্যটি মুখ ও নাকের অংশে চেপে ধরে কিছুটা ধাক্কা দেয়।

 মুহূর্তে ভাইরাল ভিডিও, বিভ্রান্ত দর্শক

ভিডিওটি মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে। অনেকেই মন্তব্য করেন—"স্ত্রীর সঙ্গে কি ঝগড়া করছিলেন ম্যাক্রোঁ?" কেউ বলছেন—"চড় খেলেন রাষ্ট্রপতি!" ফ্রান্সের অন্যতম জনপ্রিয় সংবাদপত্র লা প্যারিসিয়েন এমনকি শিরোনামেই প্রশ্ন তোলে:
"থাপ্পড় না ঝগড়া? ভিয়েতনামে ম্যাক্রোঁ-ব্রিজিটের অস্বাভাবিক মুহূর্ত!"

ম্যাক্রোঁর ব্যাখ্যা: “আমরা কেবল মজা করছিলাম”

সোমবার সাংবাদিকদের সামনে এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ। তিনি জানান, "এই ঘটনাকে বিভ্রান্তিকরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমরা কেবল মজা করছিলাম, কোনো ঝগড়া হয়নি।"

তিনি আরও বলেন, "আমার স্ত্রী ব্রিজিটের সঙ্গে আমার সম্পর্কের শুরু সেই সময়, যখন আমি ছিলাম একজন শিক্ষার্থী আর তিনি ছিলেন আমার শিক্ষক। ২০০৭ সালে আমরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। আমরা এখনো একইভাবে হাসিঠাট্টা করি, যা অনেক সময় বাইরে থেকে ভিন্নভাবে দেখা যেতে পারে।"

সিঁড়ির নিচে নেমে আরেক নাটকীয় মুহূর্ত

ভিডিওর শেষাংশে দেখা যায়, বিমানের দরজা পেরিয়ে নিচে নামার সময় ম্যাক্রোঁ স্ত্রী ব্রিজিটের দিকে হাত বাড়িয়ে দেন, কিন্তু সাড়া পান না। পরে তারা পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটতে নামেন, মুখে হালকা হাসি। এই দৃশ্যই আরো জল্পনা তৈরি করে সামাজিক মাধ্যমে—‘তাদের সম্পর্ক কি ঠিক নেই?’

ভুয়া খবরের বিরুদ্ধে সতর্ক করলেন ম্যাক্রোঁ

এই ঘটনা প্রসঙ্গে ম্যাক্রোঁ বলেন, "সামাজিক মাধ্যম এমন এক জায়গা, যেখানে যেকোনো মুহূর্তের ছবি বা ভিডিওর ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা যায়। এমনকি কিছুদিন আগেই একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল, যেখানে দাবি করা হয়—আমি জার্মান নেতাদের সঙ্গে কোকেন নিচ্ছি! অথচ আমি কেবল একটি টিস্যু নিচ্ছিলাম।"

তিনি এও বলেন, "আমি যখন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সঙ্গে করমর্দন করছিলাম, তখনও সেই মুহূর্তকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছিল। এসব হচ্ছে নতুন যুগের ষড়যন্ত্র।"

প্রেসিডেন্ট অফিসের অবস্থান

এমন ভাইরাল ভিডিও প্রসঙ্গে প্রেসিডেন্টের অফিস জানায়, "এটি ছিল সফরের শুরুতে ম্যাক্রোঁ দম্পতির একটি হালকা মুহূর্ত। এধরনের মুহূর্তে হাস্যরসই স্বাভাবিক। এটিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা অপ্রয়োজনীয়।"

 

যেখানে বিশ্ব রাজনীতি উত্তাল, যুদ্ধের দামামা চারদিকে, সেখানে একটি ‘হাস্যরসাত্মক মুহূর্ত’ নিয়ে এত আলোচনা? সত্যিই, সামাজিক মাধ্যমের যুগে বিভ্রান্তি ছড়ানো খুবই সহজ। তবে ম্যাক্রোঁ জানিয়ে দিলেন—তিনি স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করেননি, কেবল মজায় মেতে উঠেছিলেন।

Inga kommentarer hittades