close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ..

Mahamud Mithu avatar   
Mahamud Mithu
সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে শাহবাগ মোড়ে শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীদের বিক্ষোভ।..

২ জুলাই ২০২৪, ঢাকা: সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা। তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীদের এই আন্দোলন গত ২ জুলাই দুপুরে শুরু হয়, যা প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলতে থাকে।

বিক্ষোভকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে মিছিল শুরু করে নীলক্ষেত, সায়েন্স ল্যাব ও বাটা সিগন্যাল মোড় ঘুরে শাহবাগে জমায়েত হয়। সেখানে তারা 'কোটা না মেধা, মেধা মেধা', 'আঠারোর পরিপত্র-পুনর্বহাল করতে হবে', 'কোটা প্রথা নিপাত যাক- মেধাবীরা মুক্তি পাক' প্রভৃতি স্লোগান দেয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, "এটা শুধু শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীদের আন্দোলন নয়। এটা একটি রাষ্ট্রের বিষয়। মুক্তিযোদ্ধা কোটা আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এক জিনিস নয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বংশগত নয়, এটি রাষ্ট্রের আদর্শ। এই আদর্শকে আমরা তরুণেরা ধারণ করি।"

এই দাবির প্রেক্ষিতে ৩ জুলাই আবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে অবস্থান নেবেন আন্দোলনকারীরা। একই সঙ্গে দেশের সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একই ব্যানারে একই সময়ে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন নাহিদ।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আব্দুল কাদির বলেন, "৪ দফা দাবিতে আমাদের এই আন্দোলন আগামী ৪ জুলাই হাইকোর্টের শুনানি পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। ছাত্রসমাজ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রোদ-বৃষ্টি সবকিছু উপেক্ষা করে ন্যায্য আন্দোলন জারি রাখবে।"

এইদিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সামনে থেকে মিছিল শুরু করে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকে এসে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ২৫ মিনিট অবরোধ করে রাখেন। পরে সেখানে সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও একই দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। তারা ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ঝাল চত্বরে এসে মিলিত হন। শিক্ষার্থীরা ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখার দাবি জানান।

২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত ছিল। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ সংরক্ষিত ছিল। পরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের সুপারিশ করে মন্ত্রিসভা। সেই বছর ৪ অক্টোবর পরিপত্র জারি করে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি সংশোধন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তবে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে কোটা ব্যবস্থা বহাল রাখে সরকার।

এই আন্দোলনের মাধ্যমে ৪৬ বছর ধরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে যে কোটাব্যবস্থা ছিল, তা বাতিল হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করা।

এই আন্দোলন দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়েছে এবং শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

Ingen kommentarer fundet


News Card Generator