close
ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!
সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সুখবর: মহার্ঘ ভাতা পাচ্ছেন সবাই, পেনশনভোগীরাও আওতায়


সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে পেনশনভোগীরাও এই বিশেষ সুবিধার আওতায় থাকবেন। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মূল বেতনের পাশাপাশি আরও আর্থিক সুবিধা পাবেন।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমান। তিনি জানান, মহার্ঘ ভাতার বিষয়টি নির্ধারণে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা প্রযোজ্যতা ও প্রাপ্যতা পর্যালোচনা করে সুপারিশ দেবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ একটি অফিস আদেশ জারি করে। এতে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিবকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটিতে রাখা হয়েছে—জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অর্থ সচিবসহ আরও গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের কর্মকর্তারা।
বেতন কাঠামো পর্যালোচনায় মহার্ঘ ভাতা
সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সর্বশেষ ২০১৫ সালে অষ্টম বেতন স্কেল কার্যকর হয়। সাধারণত পাঁচ বছর পর নতুন পে স্কেল ঘোষণা করা হলেও এবার তা হয়নি। মূল্যস্ফীতির চাপের মুখে সরকারি কর্মচারীরা নতুন পে স্কেল ও বেতন বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছিলেন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে অর্থ মন্ত্রণালয় ২০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা প্রদানের পরিকল্পনা করেছিল। যদিও তা কার্যকর না হয়ে মূল বেতনের ৫ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া হয়।
এতে দশম গ্রেড থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি পায় ৪১২ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। পেনশনভোগীদের জন্য ন্যূনতম ৫০০ টাকা ভাতা নির্ধারণ করা হয়।
মূল্যস্ফীতির চাপে নতুন সিদ্ধান্ত
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে গত আড়াই বছর ধরে ৯ শতাংশের বেশি মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। চলতি বছরের নভেম্বরে খাদ্যে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ১৩.৮০ শতাংশ এবং খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে ৯.৩৯ শতাংশ।
নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণার পরিবর্তে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ বিশেষ পরিস্থিতিতে দেওয়া এই ভাতা মূল বেতনের সঙ্গে যুক্ত হয় না। এতে বাড়ি ভাড়াসহ অন্যান্য ভাতার কোনো পরিবর্তন হয় না।
সরকারি বরাদ্দ ও পরবর্তী পদক্ষেপ
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সরকারের বিভিন্ন বিভাগে প্রায় ১৪.৫ লাখ কর্মচারী কর্মরত আছেন। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে বেতন-ভাতা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮১ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। যদিও মহার্ঘ ভাতার জন্য আলাদা বরাদ্দ নেই, তবে কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী পরিচালন বাজেটের অন্যান্য খাতের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।
সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা
সরকারি মহার্ঘ ভাতার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদ। পরিষদের সভাপতি মো. বাদিউল কবির এবং ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব নিজাম উদ্দিন আহমেদ এক বিবৃতিতে বলেন, “সরকারের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই। এই সিদ্ধান্ত সরকারি চাকরিজীবীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করবে।”
মহার্ঘ ভাতা প্রদানের এ সিদ্ধান্ত মূল্যস্ফীতির চাপে থাকা সরকারি চাকরিজীবীদের কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে মহার্ঘ ভাতার পরিমাণ ও অন্যান্য নীতিগত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।
कोई टिप्पणी नहीं मिली